শারীরিক উপকারিতা ও অন্যান্য পুষ্টিগুণের ক্ষেত্রে বাদামের অনেক ভূমিকা রয়েছে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন-ই, ফাইবার, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, পটাশিয়াম এবং ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং আরও বিভিন্ন পুষ্ট উপাদান।
যা আমাদের শরীরের বিভিন্নভাবে কাজে লেগে থাকে। দেখা যায় নিয়মিত এক বাটি বাদাম খেলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন উপাদান এর মান বেড়ে যায়। যা মানব শরীর কে চাঙ্গা রাখে আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
বাদামের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে যেমন কাঠ বাদাম, পেস্তা বাদাম, আখরোট বাদাম, কাজুবাদাম, চিনাবাদাম! ইত্যাদি। প্রত্যেকটি বাদামের আবার মানব শরীরে আলাদা আলাদা কাজ রয়েছে।
এবার জেনে নিই বাদাম খাওয়ার উপকারিতাঃ
১। ডায়েটে সহায়তা করেঃ
আমরা বর্তমানে সাধারণত শরীরের ওজন বেড়ে গেলে আমরা ডায়েট করে থাকি। এক মুঠো বাদাম খেলে শরীরে ১৬১ ক্যালরি জমা হয়। তবে এতে আমাদের ওজন বেড়ে যায় না। এর ফলে আমাদের মাত্রারিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়।
২। মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটায়ঃ
আমরা সচরাচর বড় দের কাছ থেকে শুনে থাকি বাদাম খেলে বুদ্ধি বাড়ে। গবেষনায় দেখা গেছে বাদামে রয়েছে কগনিটিভ পাওয়ার যা মস্তিষ্কে বিকাশে বিরাট ভূমিকা পালন করে। তাই ছাত্রছাত্রীদের বিশেষ করে পরীক্ষার আগে বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৩।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বাদাম বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করে। আর এই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।
বাদামে রয়েছে মূলত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ করার মূল উপাদান। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের ত্বকের ও বয়সের দাগ ছাপ পরা থেকেও বিরত রাখে এবং আমাদের স্ট্রেস ক্ষমতা কমিয়ে কোষের ক্ষত রোধ করে।
৪ । শরীরে পুষ্টি যোগায়ঃ
পুষ্টি উপাদান এর ক্ষেত্রে বাদাম খুব প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে। মধ্যপ্রাচ্যে এই উপাদানের ফলন অনেক বেশি হয়। তবে বর্তমানে এদেশে ও এই খাদ্য উপাদানের ব্যাপক প্রসারতা বেড়েছে।
বাদামে রয়েছে বিশেষ কিছু খাদ্যউপাদান যেমন– ফাইবার, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন–ই, ফসফরাস ভিটামিন বি২ ইত্যাদি কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণে রয়েছে। এই উপাদান গুলো আমাদের শরীরের বিভিন্নভাবে কাজ করে। এবং বিভিন্ন রোগ বালাই থেকে মুক্তি রাখে।
৫।কোলেস্টেরল এর মাত্র ঠিক রাখেঃ
বর্তমানে আমাদের দেশের কোলেস্টেরল এর রোগীর সংখ্যা বেশি। আর এই অনিয়মিত কোলেস্টেরল এর থেকে হার্টের রোগীর সমসয়া বেড়ে যায়। আর তাই কোলেস্টেরল এই অনিয়মিত মাত্রা কমিয়ে ফেলতে হবে। নাহোলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই প্রত্যেকদিন ডায়েট চার্ট এ বাদাম তালিকা রাখা অতি জরুরি। এতে ক্যালরি জমা হয়। এবং হার্টের সমস্যা থেকে অতি সহযে মুক্তি পাওয়া যায়। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না থাকার ফলে বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত বাদাম খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৬। নানা সমস্যা্র সমাধা্ন করেঃ
ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি, পুষ্টির ঘাটতি, কোষের ক্ষমতা বৃদ্ধি, হজম ক্ষমতার বৃদ্ধি ইত্যাদি সকল সমস্যা সমাধানে বাদামের ভূমিকা রয়েছে।
বাদাম খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ থেকে ৩৮ শতাংশ কমে যায়। ভেজানো কাজুবাদাম খেলে দেহের অভ্যন্তরীণ ক্ষরণ বেড়ে যায় ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
বাদামের ধরণ অনুযায়ী পুষ্টিগুণঃ
চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, আখরোট বাদাম, পেস্তা বাদাম সব বাদামের আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন চিনাবাদামে শর্করা আমিষের পরিমাণ কম থাকলেও স্নেহ জাতীয় পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। আবার কাজু বাদামে রয়েছে শর্করার পরিমাণ বেশি আমিষ ও স্নেহের পরিমাণ কম।
আবার ম্যাগনেশিয়াম ও থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণে। আখরোট বাদামে স্নেহের পরিমাণ বেশি তাই ক্যালরি ও বেশি অপর দিকে শর্করা থাকে অর্ধেক পরিমাণে এবং শেষে পেস্তা বাদামে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে কিন্তু স্নেহ পদার্থের পরিমাণ কম। অর্থাৎ আমরা চাইলে বাদামের সংমিশ্রণ করে খেতে পারি। এতে আমিষ, শর্করা, স্নেহ সব উপাদান সমান থাকবে।
উপরোক্ত পদ্ধতিগুলোতে দেখা যায় বাদাম আমাদের দৈনন্দিন রুটিনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সচরাচর বিকেলের নাস্তা হিসেবেও অনেকে বাদাম খেয়ে থাকেন। আমরা চাইলে দৈনন্দিন ৩০গ্রাম কিংবা এক মুঠ বাদাম খেতে পারেন।
চাইলে একধরণের বাদাম ও খেতে পারেন আবার চাইলে সব ধরণের বাদাম থেকে নিয়ে ৩০গ্রাম বাদাম পরিমাণ করে খেতে পারেন। বাদামে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় আমিষ। নিয়মিত অভ্যাস করতে পারলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা পেতে পারেন।