7 দিনে দ্রুত সময়ে 7 কেজি ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের নিয়ম।

অতিরিক্ত ওজন আমাদের কারোরই কাম্য নয়। নিজেদের শরীরকে ফিট রাখতে এবং রোগমুক্ত রাখতে আমাদের সকলের উচিত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে শরীরকে ফিট রাখা। তোমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যারা নিজেদের ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত চিন্তিত।ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের নিয়ম

সময় এবং সুযোগের অভাবে প্রতিনিয়ত জিমনেসিয়ামে গিয়ে ব্যায়াম করতে পারছেন না। এবং অনেকেই আছেন প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে ওজন কমানো যায় তা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। আপনাদের ওজন দ্রুত সময়ে কমিয়ে আনার জন্য তেমনি একটি প্রাকৃতিক উপাদান হচ্ছে মধু। মধু  আমাদের সুস্বাস্থ্য সুন্দর ত্বক এবং বাহ্যিক আকর্ষণের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ ঠিক তেমনি দ্রুত ওজন কমাতে নিয়মিত মধুর ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী এবং ফলপ্রসূ।

তাই সুপ্রিয় বন্ধুরা যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন আমাদের এই আলোচনাটি কিভাবে মধু ব্যবহার করে মাত্র 7 দিনে 7 থেকে 10 কেজি ওজন দ্রুত কমিয়ে আনবেন তার বিস্তারিত বর্ননা নিয়ে সাজানো হয়েছে। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক 7 দিনে 7 কেজি ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের কার্যকরী কিছু নিয়ম।

ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের নিয়ম
ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের নিয়ম

7 দিনে দ্রুত সময়ে 7 কেজি ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের নিয়ম সমূহঃ

  মধু এবং লেবুর পানিয়ঃ

দ্রুত সময়ে ওজন কমাতে মধু এবং লেবুর পানীয় অত্যন্ত কার্যকরী।

 

প্রথমেই একটি গ্লাসে কুসুম গরম পানি নিন।

এরপর ওই গরম পানিতে আধা চা চামচ লেবুর রস এবং এক চা-চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

দ্রুত ওজন কমাতে সকালে উঠে এই পানীয়টি প্রতিদিন খালি পেটে খেতে পারেন।

চাইলে পানীয়টির সাথে পরিমাণমতো গ্রিন টিও মিশিয়ে নিতে পারেন।

পানীয় টি পান করার 20 থেকে 25 মিনিটের মধ্যেই সকালের নাস্তা করে নিবেন।

 

  উপকারিতাঃ

মধুর এই পানীয়টি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখে।

শরীরের হজম শক্তি বাড়ে, ফলে দ্রুত সময়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

লেবুর ভিটামিন সি এবং মধুর এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান মেদ কমাতে সাহায্য করে।

শরীরকে কর্মঠ করে এবং  শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

পানি গরম করার পর  লেবুর রস এবং মধু পানিতে মিশাবেন।

যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা রয়েছে তারা এই পানীয় টি খালি পেটে খাবেন না।

7 দিনে 7 থেকে 10 কেজি ওজন কমাতে পানীয় টি নিয়মিত পান করুন।

মধু এবং রসুনঃ

টানা 7 থেকে 10 দিন মধু এবং রসুন খালি পেটে খেলে দেহের অধিকাংশ মেদ ঝরে যায়। বিশেষ করে পেটের মেদ কমাতে খালি পেটে মধু এবং রসুন এর মিশ্রণ অত্যন্ত কার্যকরী।

 

প্রথমে একটি অথবা দুটি রসুনের অংশ খোসা ছাড়িয়ে পরিষ্কার করে ভালভাবে পেস্ট করে নিন।

এবার রসুনের পেস্ট এর সাথে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন।

প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে নিয়মিত মধু এবং রসুন এর মিশ্রণটি খেয়ে নিবেন।

 

  উপকারিতাঃ

মধু এবং রসুন দুটি এন্টিবায়োটিক উপাদান।

দুটি উপাদানেই প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেলস রয়েছে।

মধু খালি পেটে মধু এবং রসুন খেলে পেটের অতিরিক্ত মেদ কমে যায়।

ফলে নিয়মিত মধু এবং রসুনের পেস্ট খেলে দ্রুত সময়ে আপনার ওজন কমে যাবে।

 

  মধু এবং দারুচিনিঃ

এক চা চামচ দারুচিনির গুঁড়োর সাথে এক টেবিল চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন।

আমিতো খালি পেটে এই মিশ্রণটি খাবেন।

উপকারিতাঃ

মধু এবং দারুচিনির মিশ্রণ নিয়মিত খেলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কমে দ্রুত ওজন কমে যাবে।

দ্রুত সময়ে মেদ কমিয়ে আপনার শরীরকে করবে সম্পূর্ণ ফিট এবং রোগমুক্ত।

 

  মধু এবং ত্রিফলাঃ

দ্রুত সময়ের ওজন কমাতে ত্রিফলা এবং মধু অত্যন্ত কার্যকরী দুটি উপাদান।

 

এক চা-চামচ ত্রিফলা একটি গ্লাসে নিয়ে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।

সকালবেলা ত্রিফলা ভেজানো পানি ভালোভাবে গরম করে ফুটিয়ে নিন।

এরপর পানি কিছুটা ঠান্ডা করে নিয়ে তার সাথে মধু মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন।

 

  উপকারিতাঃ

ট্রিফলা পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে।

শরীর থেকে দূষিত বর্জ্য পদার্থ বের করে দিয়ে মেদ কমিয়ে নিয়ে দ্রুত সময়ে ওজন কমিয়ে আনে।

তাই নিয়মিত খালি পেটে মাত্র 7 দিন পানীয় টি পান করে নিজেদের ওজন 7 থেকে 10 কেজি কমিয়ে নিন।

মধু এবং নিম ফুলঃ

মধু এবং নিমফুলের মিশ্রন দ্রুত সময়ে ওজন কমানোর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিশ্রণ।

 

প্রথমে কিছু নিমফুল ভালোভাবে পেস্ট করে নিন।

তার সাথে সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিন যেন সম্পূর্ণ মিশ্রণটি এক থেকে দেড় চা চামচ পরিমাণ হয়।

এবার খালি পেটে সেটি খেয়ে নিন।

  উপকারিতাঃ

হজম শক্তি বৃদ্ধিতে মধুর এই মিশ্রণ  টি অত্যন্ত সহায়ক।

নিয়মিত খালি পেটে খেলে আপনার ওজন দ্রুত সময়ে কমে আসবে।

শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমিয়ে আপনার ওজন দ্রুত কমিয়ে কমিয়ে আনবে।

 

মধু এবং গোলাপের পাপড়িঃ

মধু এবং গোলাপের পাপড়ির পানীয় দ্রুত সময়ে  ওজন কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী।

কিছু গোলাপের পাপড়ি পানিতে দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন।

এবার ওই গোলাপের পাপড়ি ভেজানো পানিতে 1 চা চামচ মধু দিয়ে কুসুম গরম থাকতে  খালি পেটে খেয়ে নিন।

 

  উপকারিতাঃ

মধু এবং গোলাপের পাপড়ির পানীয়টি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে।

শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলবে।

নিয়মিত পান করলে দ্রুত সময়ে আপনার ওজন কমে আসবে।

 

মধু এবং কালোজিরাঃ

প্রায় সর্ব রোগের ওষুধ হিসেবে খ্যাত কালোজিরার সাথে মধু  মিশিয়ে খালি পেটে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে এক সপ্তা খেলে আপনার ওজন 7 থেকে 10 কেজি কমতে বাধ্য।

1 চা-চামচ কালোজিরার সাথে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে সকালে খালি পেটে এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে নিয়মিত খাবেন।

 

উপকারিতাঃ

আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলবে।

শরীর অতিরিক্ত চর্বি কমাবে।

হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে।

অতি দ্রুত সময়ে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে আপনার ওজন কমিয়ে দিবে।

 

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

ওজন কমাতে মধু ব্যবহারের সময় আপনার মধু খাঁটি কিনা সেটি যাচাই করে নিবেন।

উপরে উল্লেখিত মধুর মিশ্রণ সমুহ খালি পেটে পান করলে কোন ধরনের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা অথবা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে হালকা নাস্তা করার পরে তা সেবন করুন।

প্রত্যেকটি উপকরণ ব্যবহারের পূর্বে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিবেন।

নিয়মিত মধুর মিশ্রন  খাওয়ার পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত 3 দিন ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন।

 

 

মধু এমন একটি অনন্য গুণসম্পন্ন প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের শরীর, স্বাস্থ্য,ত্বক  সবকিছুর জন্য অত্যন্ত কার্যকরী এবং উপকারী। নিয়মিত মধু খেলে আমাদের শরীর যেমন রোগমুক্ত,সুস্থ এবং কর্মট থাকে তেমনি । নিয়মিত সাতদিন মধুর উপরে উল্লেখিত মিশনসমূহ খেলে দ্রুত সময়ে অন্তত 7 থেকে 10 কেজি ওজন কমে আসবে।তাই  দ্রুত সময়ে 7 কেজি ওজন কমাতে আমাদের নির্দেশিত পন্থা অনুসরণ করে মধুর মিশ্রন সমূহ খাবেন।

ধন্যবাদ