Breaking News

ব্যবহারের জন্য জানতে হবে হলুদের উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিক

 

বৈজ্ঞানিক নাম (Curcuma Longa) কে বলা হয় হলুদ। গাছের শিকড় থেকে পাওয়া এক ধরণের মশলা। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও পৃথিবীর অনেক দেশেই এটি রান্নায় মশলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। হলুদের প্রাচীন উৎস হলো দক্ষিণ এশিয়া থেকেই।

২০–৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হলুদের জন্ম হয় এবং প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টির দরকার হয়। বছরে একবার ই হলুদ উত্তোলন করা হয় এবং পরের বছর অই একই শিকড় থেকে নতুন হলুদের গাছ গজায়। প্রাচীম ভারতীয় আয়ুর্বেদ ও চৈনিক চিকিৎসাপদ্ধতিতে হলুদের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। তবে প্রত্যেক জিনিষের উপকারি ও অপকারী দিক রয়েছে।

আসুন জেনে নেই হলুদের উপকারিতাঃ

১। আমরা বাঙালিরা খাবার প্রিয়। খাবারে কে আরো স্বাদ করার জন্যে আমরা খাবারে বিভিন্ন ধরণের মশলা ব্যবহার করি। হলুদ ও রান্নার কাজের এক প্রকারের মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। খাবারের মধ্যে নিয়মিত হলুদ খেলে আমাদের শরীরের ওজন কমতে পারে। হলুদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

২। আমাদের মানব দেহের ত্বকের বিভিন্ন ধরণের সমস্য দেখা দেয়। বাইরের ধূলাবালি এবং অযত্নের ফলে বিভিম্ম রোগ ও সৃষ্ট হয়। এর মধ্যে রয়েছে চুলের সমস্যা  মুখেত ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি।

এক্ষেত্রে আমরা হলুদ ব্যবহার করে ত্বকের যত্ন নিতে পারি। চুলের খুশকি দূরীকরণ, মুখের তেলতেলে ভাব, ব্রণ, বয়সের দাগ–ছাপ দূর করার ক্ষেত্রে হলুদের ভূমিকা রয়েছে।

৩।সাধারণত মেয়েদের প্রত্যেক মাসে শারীরিক কিছু সমস্যা দেখা দেয়। এই প্রত্যেক মাসে ঘটে যাওয়া মাসিকের অনেক সময় আবার অনিয়ম ও দেখা দেয়। হলুদের কারকিউমিন এই অনিয়মিত হরমোনের নিয়ন্ত্রণ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৪। পাকস্থলীতে আমাদের অনেক সময় পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। সাধারণত একে আমরা গ্যাস্ট্রিকজাতীয় সমস্যা বলি। এতে আমাদের মানসিক ও শারীরিত অস্থিরতা বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে হলুদ ভীষণ উপকারি হিসেবে কাজ করে।

৫। আজকাল প্রায়ই কম বেশি সকলের ক্যান্সার রোগ দেখা দিচ্ছে। যেমন স্তন ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, পাকস্থলি ক্যান্সার,ত্বকের ক্যান্সার। এতে করে হলুদের বিশেষ ভূমিকা রাখে। হলুদের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রক্তকণিকা কে নিরাপদ রাখে। তাই নিয়মিত হলুদ সেবনে ক্যন্সার এর ঝুঁকি থেকে বাঁচার উপায় আছে।

হলুদের শুধু উপকারী দিক না বরং অপকারি দিক ও রয়েছে। যে কোনো উপাদানের তুলনার দিক থেকে বেশি ব্যবহার করলে সেই উপাদানের গুণাগুণ মান ও কমে যায়।

আসুন জেনে নিই হলুদের অপকারিতাঃ

১।অনেক ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, নিয়মিত কয়েক টেবিল চামচ হলুদ খাওয়ার জন্যে। তবে এইভাবে নিয়মিত দীর্ঘদীন হলুদ খেলে পেটে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই অতিরিক্ত হলুদ ব্যবহার করা যাবেনা। এবং বয়স্ক ও শিশুদের ক্ষেত্রে বিষয় টি খেয়াল রাখতে হবে।

২।বর্তমানে বিভিন্ন ধরণের রোগের মধ্যে এলার্জি রোগ টা বেশি দেখা দেয়। সাধারনত আমাদের দৈনন্দিন খাবারের ফলে এই সমস্যা দেখা দেয়। ডিম, মাছ, বেগুন ইত্যাদি খাবারে অনেকের এলার্জির সমস্যা দেখা দেয় তবে অতিরিক্ত মাত্রার হলুদে ও এলার্জি সমস্যা দেখা দেয়।

৩।আজকাল বার্ধক্য রোগীদের ব্যাথার সমস্যা বেশি দেখা দেয়। ফলে অনেকে সাময়িক আরামের জন্যে কেমোথেরাপি দিয়ে থাকেন। কিন্তু যারা অধিক পরিমাণে হলুদ ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই কেমোথেরাপি রোগীদের হলুদ পরিহার করতে হবে।

৪।আমাদের যারা গর্ভবতী মা বোনেরা রয়েছেন তাঁদের উচিত হলুদ কে পরিহার করা। কেননা হলুদ ইউটেরাইন স্টিমুল্যান্ট হিসেবে কাজ করে। এই ইউটেরাইন মেন্সট্রুয়াল ফ্লো কে উৎসাহিত করেন। তাই গর্ভবতী মহিলাদের হলুদ এড়িয়ে চলা উচিত।

৫।বেশি হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করলে আমাদের নিয়মিত খাওয়াত ওষুধেত সাথে ও ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া করবে। এবং ওষুধের কাজে বাধা প্রদান করবে। যেমন ওয়ারফারিন, স্টেরয়েড, অ্যাসপিরিন এইগুলা হলুদের সাথে ক্রিয়া করে কাজে বাধা দেয়।

অর্থাৎ উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো হতে দেখা যায়। যেকোনো খাদ্য উপাদানের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাস্থ্যের উপোযোগী না। সকল উপাদানের ব্যবহারের মাত্রা সঠিক ভাবে করতে হবে। তাই হলুদের অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের পক্ষেও উপোযোগী নয়। সঠিক মাত্রায় হলুদ ব্যবহারে সচেতন হোন।