কোয়েল পাখির ডিম খেলে কি হয়?এ ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা কি?

পৃথিবীতে যত ধরণের ডিম খাদ্য উপোযোগী রয়েছে  তার মধ্যে গুণে মানে পুষ্টিতে ভরপুর হলো কোয়েল পাখির ডিম। সাধারণত বয়স ৪০ পার হলেই ডিম পরিহার করতে বলা হয় । কেননা ব্রয়লারের ডিমগুলো খেলে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেড়ে যায় কিন্তু তার পরিবর্তে কোয়েল পাখির ডিম যেকোনো বয়সের মানুষেরা সহজেই নিসঃকোচে খেতে পারবেন।কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা

এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বরং বিভিন্ন কঠিন রোগ থেকে রয়েছে বাঁচার উপায়। হার্টের সমস্যা, কিডনি সমস্যা, অতিরিক্ত ওজন, রোগ প্রতিরোধ, ফুসফুসের সমস্যা, স্মরণ শক্তি, পাকস্থলির সমস্যা, রক্তের পরিমাণ কমে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা ইত্যাদি সকল সমস্যার সমাধানের রয়েছে কোয়েল পাখির ডিমের ভূমিকা। তবে এই ডিম যে শুধু উপকারি তা নয় এর কিছু অপকারিতা ও আছে।

আসুন জেনে নিই কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা এবং অপকারিতাঃ

১।শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটায়ঃশিশুদের জন্য কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা

কোয়েলের ডিম যেমন সকল বয়সের লোকেরা খেতে পারবেন তেমনি বাচ্চাদের জন্যে খুব উপকারি। কোয়েলের ডিম স্মরণ শক্তি বাড়ায়। এতে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটায়।

২। শরীর সুস্থ রাখেঃকোয়েল পাখির ডিমের ওজন

চাইনিজরা কোয়েলের ডিমকে অন্যান্য রোগের পনিরাময়  হিসেবে ও ব্যবহার করে। যেমন–ডায়াবেটিস, টিবি, অ্যাজমা ইত্যাদি। কোয়েলের ডিমের মাধ্যমে কিডনি,লিভার সুস্থ থাকে অনেক সময় পিত্তথলিতে যে পাথর হয় তা গলাতেও সাহায্য করে এই পাখির ডিম।

৩।এলার্জি প্রতিরোধ করেঃকোয়েল পাখির ডিম বনাম মুরগির ডিম

আমাদের কম বেশি সকলেরই সারা বছর জ্বর, সর্দি, এলার্জি সমস্যা লেগেই থাকে। এতে কোয়েল পাখির খুব উপকারী হিসেবে কাজ করে। কেননা এই ডিমে রয়েছে এলার্জির প্রতিরোধক উপাদান।

৪। বয়স চাপ বৃদ্ধি ধীর করেঃ কোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম

কোয়েলের ডিমে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’ যা চোখের সমস্যার ক্ষেত্রে উপকারি হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে ডিমের সাদা অংশে রয়েছে লাইসিন ৮ নামক অ্যামিনো এসিড তাকে যা ত্বকে কোলাজেন ঘটনে সহায়তা করে। এবং এতে আরো রয়েছে কোলিন নামক পুষ্টি উপাদান যা বয়স বৃদ্ধি কমায় ।

৫।দেহকে পরিষ্কার রাখেঃ

পরিবেশে ময়লা হলে যেমন পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হয় তেমনি শরীরের অভ্যন্তরীণ এ অনেক ময়লা আবর্জনা থাকে। কোয়েল পাখির ডিম এইসব আবর্জনাকে রক্তপ্রবাহ থেকে মূত্রের মাধ্যমে দূরীকরণে সহায়তা করে। এবং আমাদের দেহকে পরিষ্কার রাখে।

৬।দেহের শক্তি বাড়ায় ও রক্ত স্বল্পতা দূর করেঃগর্ভাবস্থায় কোয়েল পাখির ডিমের উপকারিতা

কোয়েলের ডিম আমাদের শরীরে শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে এবং দেহের শক্তি বাড়ায়। কোয়েল পাখির ডিমে উপস্থিত অ্যামিনো এসিড নতুন নতুন টিস্যু তৈরি করে,টিস্যুর ক্ষয়রোধ করে, ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখে, আয়রনের পভাব পূরন হয় ফলে রক্ত স্বল্পতা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

৭। ত্বক ও চুলের জন্য উপকারিঃকোয়েল পাখির উপকারিতা

অন্যাম্য সব অঙ্গ,প্রতঙ্গ থেকেও আমাদের ত্বক, চুল, যত্ন বেশি নেয়া হয়। এই ডিমে রয়েছে ভিটামিন বি যা চোখের দৃষ্টশক্তি রক্ষার সাথে সাথে লোহিত রক্ত কণিকাও উৎপাদন করে যা আমাদের ত্বক, চুলের জন্যে খুবই উপকারি হিসেবে কাজ করে।

কোন বয়সে কতটা ডিম খাওয়া উপকারিঃকোয়েল পাখির ডিম খাওয়ার নিয়ম

কোয়েলের ডিম বয়স ভেদে কতটি করে খেতে পারবেন তা জানা জরুরি। যারা ১ থেকে ৭ বছর বয়স তারা ২/৩ টা ডিম খেতে পারবেন,যারা ৮ থেকে ১৫ বছর বয়সী তারা নিয়মিত ৩টা ডিম খেতে পারবেন,যারা ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী তারা ৪/৫টা খেতে পারেন আর যারা প্রাপ্র বয়স্ক তাঁরা চাইলে ৪৯ দিনে ২৪৯ টি ডিম খেতে পারেন।

কোয়েলের ডিমের অপকারিতাঃ

কোয়েলের ডিমের যেমন উপকারিতা আছে তেমন অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়ার ফলে অপকারিতা ও আছে

যেমনঃ

১। কোলেস্টেরল এর সমস্যা বাড়ায়ঃকোয়েল পাখির ডিমের ক্ষতিকর দিক

কোয়েলের ১০০গ্রাম ডিমে থাকে ৮৪৪গ্রাম কোলেস্টেরল। যা অন্যান্য ডিম থেকে বেশি। তাই যাদের কোলেস্টেরল এর সমস্যা বেশি তাদের উচিত এই ডিমের অতিরিক্ত খাওয়া পরিহার করা।

২। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীদের সমস্যার কারণঃকোয়েল পাখির ডিমের অপকারিতা

যারা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের রোগী আছেন তাদের যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে তাহোলে তাদের ক্ষেত্রে কোয়েলের ডিম এডিয়ে চলা উচিত। কেননা এতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট আছে। এই ফ্যাট অন্যান্য রোগীদের সমস্যার কারণ হতে পারে।

উপরোক্ত পদ্ধতিতে দেখা যায় কোয়েল পাখির উপাকারিতা বেশি। আমরা যদি এই ডিম খাওয়ার মাত্রা অতিরিক্ত বাড়িয়ে দি তখন আমাদের শরীরের জন্যে ক্ষতিকর হয়ে যায়। অর্থাৎ কোনো জিনিষের ই অতিরিক্ত গ্রহণ করা ভালো না। আমরা নিয়ম মাফিক খাবার খাবো সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলব।