বৈজ্ঞানিক নাম (Cocos nucifera) এরিকাসি পরিবারের কোকোস গণের গুরত্বপূর্ণ ফল হলো নারকেল ফল। সাধারণত কচি নারকেলকে ডাব বলে থাকি। নারকেল গাছ আকারে লম্বা হয়।এর কোনো ডাল পালা থাকে না। নারকেলের কয়েকটি স্তর থাকে নারকেলের উপরে যে অংশ টি আছে তাকে বলা হয় ছোবড়া, ছোবড়ার পরে ইয়েছে কঠিন একটি কোলস, এই কোলসের ভিতরে রইয়েছে সাদা শাঁস ও পানি।
নারকেল গাছকে ট্রি অফ লাইফ বলা হইয়। একটি নারকেলের মধ্যে ৭টি অংশ রয়েছে। যেমনঃ ক।ডাব ও নারকেলের পানি খ।নারকেলের তেল গ।নারকেলের আটা ঘ।নারকেলের দুধ ঙ।নারকেলের ফোঁপল চ।শক্ত নারকেল ছ।ডাবের নরম ও পাতলা শাঁস। এই ৭টি অংশ মানবদেহে বিভিন্নভাবে কাজ করে। শুধুমাত্র মানবদেহ না প্রাণীদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ও নারকেল বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করে।
আসুন জেনে নিই নারকেলের উপকারিতাঃ
১/ শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ করেঃ
আমাদের মানবদেহে বর্তমানে বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে বমি, বদহজম সমস্যা খুব বেশি হয়ে থাকে। পেটে জমে থাকা গ্যাসের ফলে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়।
এতে আমাদের শরীরে যখন বমি হয় তখন আমদের শরীর থেকে প্রয়োজনীয় লবণ ও পানি বের হয়ে যায় এবং আমাদের শরীর দূর্বল হয়ে পরে। ডাক্তারেরা এই সময় খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দেন তবে এর পাশাপাশি ডাবের পানি ও খেতে বলেন। কেননা এতে আমাদের শরীরের যে পানি ঘাটতি দেখা দেয় তা পূরণ হয়ে যায়।
২/ চুলের ও ত্বকের সমস্যা দূর করেঃ
চুলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আমরা নারকেলের তেল ব্যবহার করি। চুলের গোড়া নরম,খুশকি,এলার্জি জাতীয় সমস্যা থাকলে তা নারকেল তেল ব্যবহারের ফলে উপল্কৃত হওয়া যায়।
এছাড়া শুধু চুল না ত্বকের সমস্যা সমধানে নারকেল তেল বিশেষ ভাবে কাজ করে।ত্বকের ঝুলে যাওয়া, চুলকানি, এগজিমা,র্যাশ,ত্বকের ইনফেকশন,হারপিস ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে নারকেল তেল ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ত্বকের ক্ষত, পুঁজ দূর করে ক্ষত জায়গা শুকানোর ক্ষেত্রে নারকেল তেল সাহায্য করে।
৩/ ডায়েট পরিপূর্ণ করেঃ
যাদের শরীরের ওজন বেশি এবং থাইরয়েড সমস্যা বেশি তারা ওজন কমানোর জন্যে কেটোজনিক ডায়েট করে থাকেন। এই ডায়েট করার সময় কঠোরভাবে নিয়ম মানতে হয়।এই নিয়মিত ডায়েট মেনে চলার জন্যে আমরা ডায়েট চার্ট তৈরি করি।
এই ডায়েট চার্টে আমরা সকালের নাস্তায় ২০ থেকে ৩০ গ্রাম নারকেল খেতে পারি এবং রাতে ৫০ গ্রাম নারকেল খেতে পারি। এছাড়া যেকোনো ফলের পরিবর্তে আমরা ডাবের পানি খেতে পারিঙ্গেতে পানির অভাব দূর হয় এবং ক্ষুধা কিছুটা নিবারণ হয়। এইভাবে নিয়ম মেনে চললে সপ্তাহে ৩কেজি ওজন কমতে পারে।
৪/ হার্ট ভালো রাখেঃ
নারকেলের দুধ হাড়ের সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে সাহয্য করে। এছাড়া লিভারজনিত সমস্যা যেমন হেপাটাইটিস সি ও জন্ডিসের সমস্যা সমাধানে ও নারকেল দধ খাওয়া যায়। নারকেল রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমিয়ে হার্ট ভালো রাখে।
এছাড়া দাঁতের রোগ,ক্যাভিটিজ,মাড়ির সমস্যা সমাধানে নারকেলের কোড়া দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের উপকার হয়।কিডনীর পাথর, কিডনীর সমস্যা, টিবি, টিউমার, টাইফয়েড, আলসার ইত্যাদি সমস্যায় নারকেল ফল উপকার করে।এছাড়া নারকেলের পানি হলো সুগার ও ফ্যাট ফ্রি।তাই এই পানি পান করতে সমস্যা নেই।
৫/যারা গর্ভবতী মা রয়েছেন তাদের গর্ভের আগে থেকে স্ট্রেচ মার্ক দাগ দেখা দেয়। গর্ভপাতের পরেও এই দাগ থাকে। তাই শুরু থেকে যদি নারকেল তেল নিয়মিত ব্যবহার করা হয় তাহোলে এই দাগ তেমন একটা থাকেনা। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
উপরোক্ত ধাপ গুলোতে দেখা যায়, নারকেল আমাদের মানবদেহের বিভিন্ন উপকারী ফল হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে খেয়াল রাখতে হবে এই ফলে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড থাকে।
তাই যাদের কোলেস্টেরল ও হার্টের সমস্যা বেশি তারা এই ফলটা বেশি পরিমাণে খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এতে সমস্যা বাড়তে থাকবে। তবে নিয়ম করে এই ফল খেলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবেনা।