ব্রণ হলো অ্যাকনি ভালগারিস (Acne vulgaris or Acne)। আমরা সাধারণ মুখের লালচে ত্বক, কাটা দাগ, ক্ষতচিহ্ন, পিম্পল, নডিউল, তৈলাক্ত ত্বক ইত্যাদি বিশেষ চিহ্ন দেখেই বুঝতে পারি ব্রণ এর লক্ষণ। ব্রণ হলো মানুষের ত্বকের ফলিকলের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগবিশেষ। এছাড়া বিভিন্ন মানসিক দুশ্চিন্তা, রাত জাগা, বিষণ্ণতা, মানসিক অবসাদ, যেকোনো বিষয়ে ভেঙ্গে পড়া আর ভয় ভীতি ইত্যাদি থেকেও ব্রণ হতে পারে। আরো বিভিন্ন উপায়ে ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেমন সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে লিঙ্গ নির্বিশেষে টেস্টোস্টেরন এবং প্রোজেস্ট্রোরেনের এর মত অ্যান্ড্রোজেন বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন বৃদ্ধির এর ফলে ব্রণ হতে পারে। বাইরের ধূলাবালির কারণে আমাদের মুখের ত্বকে অনেক সময় তৈলাক্ত হয়ে যায়। এই তৈলাক্ত গ্রন্থি বেড়ে গেলে ব্রণ বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া মুখমন্ডল, গলা, বুক, পিঠের উপরিভাগ এবং হাতের উপরিভাগে ব্রণ হয়ে থাকে। এসব স্থানে ছোট ছোট দানা, ছোট ছোট ফোড়া, সিস্ট এমনকি নোডিউল হতে পারে। ব্রণ সাধারণত মুখমন্ডলেই বেশি হয় বিশেষ করে গালে, নাকে, কপালে এবং থুতনিতে সবচেয়ে বেশী হয়ে থাকে। সাধারনত ১৩–১৯ বছর বয়সে এই ব্রণের সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাই ২০১০ সালে পুরো বিশ্বব্যাপী ৬৫০ মিলিয়ন মানুষের কাছে ব্রণ ৮ম রোগ হিসেবে নির্ণীত হয়েছে। তৈলাক্ত ত্বকে এই সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
তবে তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়ার ও কিছু উপায় আছে। জেনে নেই ব্রণ থেকে মুক্তি উপায়ঃ
১।তৈলাক্ত তক্বে ব্রণ থেকে ধূরে রাখতে হলে আগে নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অর্থাৎ মুখের ত্বক সবসময় ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। কেননা অপরিচ্ছন্ন তক্বে তৈলাক্ত ভাব বেশি। তবে আবার সবসময় মুখ ধুতে হবেনা। দিনে ৩বার ভালোভাবে পরিষ্কার করে মুখ ধুয়ে পাতলা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছে নিতে হবে।
২।আমাদের অনেকের বাসায় অ্যালোভেরা কিংবা ঘৃতকুমারী গাছ রয়েছে। এই অ্যালোভেরা মুখের ব্রণ ও দাগ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এই গাছের পাতার মধ্যে যে জেল টি রয়েছে তা নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। ভালো ফলাফল পেতে দৈনিক ব্যবহার করুন। এতে কোনো ত্বকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। ফলে মুখের তৈলাক্ত ভাবে ও দূর হয়ে যাবে। ত্বকে নরম ও পরিষ্কার থাকবে।
৩।সাদা রুটি, আলুভাজা, গরুর দুধ, তেলজাতীয় খাবার, মিষ্টি, ভুট্টার গুঁড়া ইত্যাদিতে রয়েছে আমীষ ও প্রোটিনের সংমিশ্রণ বেশি। এই খাবার অতিরিক্ত খেলে আমাদের ফ্যাটের সমস্যা ও বেড়ে যায়। এতে মুখে তৈলাক্ত ভাব দেখা যায় এই তৈলাক্ত ভাবের জন্যেও মুখে ব্রণের সংখ্যা বেড়া যায়। খাদ্য প্রিয় মানুষদের এই খাবার গুলা পরিহার কএতে হবে।
৪।যারা রোজ রোজ বের হোন বাসা থেকে তারা অবশ্যই সাথে পানি রাখবেন আপনার ক্লান্তিহীনতা দূর করবে। কেননা বাইরের ধূলাবালি ত্বকের উপর জমাট হয়ে আস্তরণ পরে।এতে মুখের ত্বক চিটচিটে হয় যায়। এতে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেললে আর সেই চিটচিটে ভাব থাকেনা। এবং পানি পান ও করা যেতে পারে এতে পানি মুখের ব্রণের সমস্যা ও কমাবে।
৫।অনেক প্রসাধনী আছে যেগুলোতে ব্যবহারে মুখে তেলতেলে জমা হয়। সেই সকল প্রসাধনীর ফলে অনেকের মুখের ত্বকের ব্রণের সমস্যা সহযে সমাধান হয় না। তাই যেসকল প্রসাধনীতে এই সমস্যা রয়েছে। বা যাদের ত্বকে প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারে ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করে তাদের উচিত প্রসাধনী ব্যবহার না করা।
৬।দই আর বেসন আমাদের ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। দই আমাদের মুখের ত্বক কে নরম রাখে আর বেসন মুখের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়। এই ২টি উপাদান একসাথে মিশয়ে প্যাক বানিয়ে মুখে ব্যবহার করুন। ২টেবিল চামচ বেসনের সাথে ১টেবিল চামচ দই মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ফেলুন এবার এতে ১চিমটি হলুদ আর ২ফোঁটা মধু বানিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। এবার ১৫মিনিট পরে ঠান্ডা পানতে ধুয়ে নিন।
উপরে কয়েকটি পদ্ধতি আর উপায় রয়েছে যেগুলো আপনাদের সহযে মুখের তৈলাক্তভাবের সমাধান দিবে।