বর্তমানে এলার্জি হলো সবচেয়ে বহুল প্রচলিত একটি চর্ম রোগ। যা যেকোনো বয়সের লোকেদের হয়ে থাকে। তবে এলার্জি বিভিন্ন উৎস থেকে হয়ে থাকে অনেকের খাবারে এলার্জি, ধূলাবালি থেকে এলার্জি, বংশগত এলার্জি, ওষুধ থেকে এলার্জি আবার কারো কারো সেন্সিটিভ ত্বকের জন্যেও এলার্জি হয়। তবে এলার্জি যে ধরণের হোক না কেনো তা থেকে প্রতিরোধ করা উচিত।
আসুন জেনে নিই ঘরোয়াভাবে এলার্জি থেকে কীভাবে মুক্তি লাভ করা যায়
১।সাধারণত যাদের বাইরের ধূলাবালি থেকে এলার্জি হয় তাকে বলা হয় ডাস্ট এলার্জি। ডাস্ট এলার্জিতে আমাদের নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়। ধূলাবালি নাকের ভিতরে ডুকে নানান ধরণের জীবাণু হতে পারে। তাই যাদের ডাস্ট এলার্জির সমস্যা রয়েছে তারা বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করবেন।
২।যাদের ত্বকে এলার্জি রয়েছে অথবা শরীরে অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গে এলার্জি তাদের বিভিন্ন র্যাশ হয়ে যায়, ত্বক লালচে হয়ে যায়। এ সময় যদি অ্যালোভেরা গাছের পাতা থেকে নেয়া জেল অই লালচে অংশে নিয়মিত লাগানো হয় তাহোলে এই দাগ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
৩।এলার্জি থেকে মুক্তি পেতে একটি সহজ উপায় হলো ১গ্লাস পানিতে অ্যাপল সিডার ভিনেগার নিয়ে একসাথে মিশিয়ে প্রত্যেকদিন পান করুন। এলার্জির সমস্যা দূর করতে দারুণ ভাবে কাজ করবে।
৪।নিম পাতাকে আমরা সাধারণত ভেষজ উপাদান হিসেবে কাজে লাগাই। অর্থাৎ ঔষধের ক্ষেত্রে নিম পাতা বিশেষভাবে কাজ করে। ত্বকে যেখানে যেখানে এলার্জির সমস্যা রয়েছে সেখানে নিম পাতার প্রলেপ দেয়া যেতে পারে এবং নিম পাতাকে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল কর। যেতে পারে। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
৫।এলার্জির সমস্যার ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াটাও ভীষণ জরুরি। কেননা কিছু কিছু এলার্জির সমস্যা কোনো ঘরোয়া উপায়ে সমাধান হলে তখন ঔষধ ব্যবহার করা প্রয়োজন। যেনো তেনো ঔষধ না খেয়ে ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ঔষধ খেতে হবে। এতে এলার্জির সমস্য থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
৬।অনেক সময় আমাদের এলার্জি না থাকলেও অন্যের ব্যবহৃত জিনিষপত্র ব্যবহার করলে এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে আমাদের অন্যের জিনিসপত্র ব্যবহার করা থেকে সাবধান থাকতে হবে। এছাড়াও সপ্তাহে একদিন জামা কাপড়, বিছানা পত্র রোদের শুকাতে দেওয়া উচিত। এতে বিভিন্ন জীবাণু থাকলে তা সূর্যের তাপে মরে যেতে পারে।
৭। অনেকের খাবারে এলার্জি আছে যেমন বেগুন, আলু, মাংস, দুধ, ডিম, কচু, শুটকি ইত্যাদি বিভিন্ন খাদ্য দ্রব্য রয়েছে যেগুলোতে এলার্জির সংক্রমণ হয়ে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই যাদের এসকল খাদ্যে এলার্জি রয়েছে তারা এই সকল খাদ্য পরিহার করে চলবেন।
৮।আমরা যারা চা পান করি তারা অনেকেই গ্রিন টি পান করে থাকি। সাধারণত যারা ওজন কমাতে চাই তারা সচরাচর গ্রিন টি বেশি খেয়ে থাকেন। এই গ্রিন টিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আর চমৎকার বিষয় হলো এই গ্রিন টি আমাদের এলার্জির সমস্যা দূরীকরণে ও বিশেষভাবে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে আমরা যদি এলার্জি জাতীয় খাবার খেয়ে থাকি তবে তাতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে বাধা প্রদান করে।
৯।আমাদের অনেক সময় এলার্জিজাতীয় খাবার ভুলে খেয়ে ফেললে সাথে সাথে তা আমাদের শরীরের বিরুদ্ধে কাজ করে শরীরে বিভিন্ন বিরূপ প্রতিক্রিয়া শুরু করে দেয়। এক্ষেত্রে যদি আমরা শসা আর গাজরের রস একসাথে মিশিয়ে খাই তাহোলে তা অনেকটা সেই সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। কেননা শসা আর গাজরে রয়েছে অ্যান্টি এলার্জি উপাদান।
১০।অনেক সময় আমাদের পাকস্থলীতে যখন প্রোটিনের উপাদান মাত্রা বেশি দেখা দেয় তখন ও এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে। এসময় বলা হয় এসিডিক জাতীয় খাবার অর্থাৎ ভিটামিন সি জাতীয় খাদ্য খেতে। কমলা, আমলকী ইত্যাদি ফলগুলো বিশেষভাবে উপকার করে থাকে।
উপরোক্ত পদ্ধতি গুলো হলো কীভাবে ঘরোয়াভাবে এলার্জির সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। তবে এটি কোনো জটিল সমস্যা নয়। নিয়ম মেনে খাবার খেলে এবং সঠিক নিয়ম মেনে চললে এলার্জি সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান হবে।