মেয়েদের সাধারণত বিয়ের পরে অনেক ধরনের পরিবর্তন হয়। তবে বাল্যবিবাহ এর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে বুঝতে পারেন না সে গর্ভবতী কি না বা তার শারীরিক পরিবর্তন কিছুই সে বুঝতে পারেনা।
তবে গর্ভধারণ করে প্রত্যেক মেয়ে মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করে। তবে আমরা নিশ্চিত হওয়ার জন্যে সাধারণত ডাক্তারের শরণাপর্ণ হয়ে থাকি। কিন্তু এছাড়াও আমরা ঘরে বসেই জানতে পারি গর্ভবতী কি না। গর্ভবতী হলে আমাদের শরীর ও মনে বিভিন্ন পার্থক্য ঘটে।
গর্ভবতী হওয়ার ৮ টি প্রাথমিক লক্ষণঃ
১। পিরিয়ড বা মাসিক চক্র বন্ধঃ
সাধারণত মেয়েদের ২৮ দিন অন্তর অন্তর পিরিয়ড বা মাসিক চক্র হয়ে থাকে। কিন্তু যখন গর্ভবতী হয় তখন মাসিকচক্র বন্ধ থাকে। যদি এরকম দু মাস মাসিক বন্ধের উপক্রম হয় আর কিছু পরিবর্তন দেখা দেয় তবে বুঝতে হবে আপনি গর্ভধারণ করেছেন।
২। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাবঃ
আমরা সাধারণত শুনে থাকি মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, শরীরে অস্বস্থিকর বোধ করা এই লক্ষণ গুলা দেখা দিলে আমরা বলে থাকি গর্ভবতী হয়েছে।
এসময় শরীর টাও খুব দূর্বল হয়ে যায়। মুখে অরুচি ভাব। কিছু খেতে মন চায়না। খাবারে অনীহা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। সাধারণত গর্ভধারণ এর ১মাসের মধ্যে এই উপসর্গ গুলো দেখা দেয়। এই উপসর্গ দেখা দিলেও বুঝতে পারবেন আপনি গর্ভবতী কি না।
৩। পেট ফুলে যাওয়াঃ
অনেকের হরমোনের পরিবর্তনের ফলে পেট ফুলে যায়। আর পেটে ব্যাথা হয় কিছুটা। সাধারণত পিরিয়ড হওয়ার সময় যেরকম অনুভব হয় ঠিক সেরকম অনুভুতি হয়।
আপনার মনে হয় আপনি যে কাপড়টা পড়েছেন তা হয়তো কোমরের দিকে ছোট হয়ে গেছে। এতে ভয় পেতে হবে না। শুরুর দিকে এই পরিবর্তন গুলা দেখা দেয়। তবে তখনো জরায়ুতে কোনো পরিবর্তন হয় নি।
৪। স্তনের সাইজ পরিবর্তনঃ
একটি বিশেষ পরিবর্তন হলো মেয়েদের স্তন এর পরিবর্তন। আপনি যদি গর্ভধারণ করেন তাহোলে আপনার স্তন এর সাইজ কিছুটা বেড়ে যাবে। স্তন অনেক স্পর্শকাতর আর নরম হয়ে যায়।
কিছুটা ফুলে উঠে আর ব্যাথা অনুভব হয়। আর নিপলের রঙ অনেকটা গাঢ় হয়ে যায়। তবে আস্তে আস্তে শরীরের এই পরিবর্তন খাপ খেয়ে যাবে।
৫। প্রসাবের মাত্রা বেড়ে যাওয়াঃ
প্রসাবের মাত্রা বেড়ে যায়। শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের দেখা যায়। তবে একটা পরিবর্তন হলো রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি। রক্তপ্রবাহের ফলে বার বার প্রসাব হয়।
ঘন প্রসাবের মাত্রা বেড়ে যায়। সাধারণত গর্ভধারণের ৬ সপ্তাহের মধ্যে এই উপসর্গ দেখা দেয়। তবে হ্যাঁ অনেক দিন পর্যন্ত এই উপসর্গ দেখা যায়। শরীরে বাচ্চা যতো বড় হয় ততোই এই ঘন ঘন প্রসাবের মাত্রা বাড়তে থাকে।
৬। মানসিক অবসাদঃ
অনেকে এই সময়ে মানসিকভাবে অবসাদে থাকে। কারো সাথে কথা বলা, জমিয়ে আড্ডা দেয়া, কিংবা কোনো কাজেই মন বসেনা। শরীরে হঠাৎ করে পরিবর্তনটা মেনে নিতে কিছুটা কষ্ট হয় বা শরীরে খাপ খেতে সময় লাগে।
এই সময় একা থাকতে চায়, ঘুম ঘুম ভাব, আবার রাতে ঘুম হয় না। আরো বিভিন্ন রকমের উপসর্গ দেখা দেয়। এসব হলেও বুঝা যায় আপনি গর্ভধারণ করেছেন কি না।
৭। শরীরের তাপমাত্রা উঠা নামাঃ
আমাদের শরীরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা রয়েছে। খেয়াল রাখবেন আপনার শরীরের তাপমাত্রা উঠা নামা করছে কি না।
যদি দেখেন আপনার শরীরের তাপমাত্রা একটা ১৮দিন ধরে বাড়তে থাকে অর্থাৎ স্বাভাবিক থাকেনা তাহোলে বুঝতে হবে আপনি গর্ভধারণ করেছেন।
প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপঃ
প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপের কথা সবার শুনেছেন। এই প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপের মাধ্যমে আমরা জানতে পার গর্ভবতী কি না। প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপে সাধারণত ২টা দাগ থাকে।
সকালের প্রথম প্রসাবের শেষ ভাগ কে একটি কৌটাতে নিয়ে সেখানে প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপ দিয়ে যদি দেখা যায় সেখানে ২টি দাগে দেখা যাচ্ছে তাহোলে তিনি গর্ভধারণ করেছেন। আর যদি ১টি দাগ থাকে তাহোলে গর্ভধারণ করেন নি।
তাই উপরুক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপের মাধ্যমে যাচাই করে নিন গর্ভধারণ করেছেন কি না ।
উপরোক্ত পদ্ধতিতে আমরা জানতে পারলাম গর্ভধারণ হলে নারীদের শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তনের কথা। তাই ভয় পেয়ে নয় সচেতন হোন। গর্ভধারণে ভয় নেই, জেনে বুঝে সুস্থ থাকতে হবে। তবেই একজন মা সুস্থ সন্তানের জন্ম দিতে পারবে।