বর্তমানে বিজ্ঞানীদের বহুল প্রচলিত একটি বিষয় হলো মোবাইল রেডিয়েশন। রেডিয়েশন হলো তেজস্ক্রিয় রশ্মি বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এক প্রকার তড়িৎ চুম্বকীয় বিচ্ছুরিত রশ্মি অথবা পাওয়ার। আমরা যখন একটি মোবাইল থেকে অন্য একটি মোবাইলে কথাবার্তা বলি তখন এক প্রকার শক্তি আসা যাওয়া করে তাকে রেডিয়েশন বলে। আকাশে বিদ্যুৎ চমকালে যেরকম হয় সেরকম হলোই রেডিয়েশন। এই অতি মাত্রার রেডিয়েশন থেকে ব্রেইন ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কেননা এই রেডিয়েশন কোষ সেলের কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে শরীরে বিভিন্ন ক্ষতি হয়। আর বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশি।
আসুন জেনে নিই মোবাইল রেডিয়েশন থেকে বাঁচার উপায়ঃ
১।প্রথমত চেষ্টা করবেন যত সম্ভব মোবাইল টাকে দূরে সরিয়ে কথা বলার। অর্থাৎ সরাসরি কানের পাশে নিয়ে কথা না বলার। এক্ষেত্রে আপনি ইয়ারফোন, ব্লুটুথ ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। এতে সরাসরি রেডিয়েশন এর ক্ষতির সম্ভাবনা হওয়া থেকে এড়ানো যায়। আমরা অনেকে আবার রাতে কথা বলা শেষ হলে মোবাইল ফোন পাশে রেখে ঘুমায়। চেষ্টা করব কয়েকফিট দূরে রাখার। পারলে মোবাইল বন্ধ করে ঘুমাবো।
২। আমরা যেহেতু কথা বলতে বেশি ভালোবাসি দেখা যায় দিনের অনেক সময় আমরা মোবাইল ফোনে কথা বলে সময় পার করে দিই। কিন্তু এতে আমাদের রেডিয়েশনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আমরা এক্ষেত্রে একটা কাজ করতে পারি মোবাইলে একটা কল টাইম ডিউরেশন ব্যবহার করতে পারি এতে নির্দিষ্ট সময় পর পর কল কেটে যাবে। আমরা কলের পরিবর্তে ভয়েস মেসেজ আদান প্রদান কিংবা টেক্সট মেসেজে কথা বিনিময় করতে পারি।
৩।মোবাইলে লো ব্যাটারি কিংবা অনেক সময় বার বার নেটওয়ার্ক ফেল করা এই সমস্যা গুলো আছে। এই সময় আমরা যতটা সম্ভব ফোনে কল করা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। কারণ যখন মোবাইলে চার্জ একদম কম থাকে তখন মোবাইল থেকে রেডিয়েশন বেশি নির্গত হয়। এই সময় রেডিয়েশন ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। আর নেটওয়ার্ক বার বার ফেল করলে মেসেজ দিয়ে দিন কিংবা ভয়েস মেসেজ দিন। এতে রেডিয়েশন এর ঝুঁকি থেকে বাঁচতে পারবে। আর খুব জরুরি না হলে এই অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকবেন।
৪।আবদ্ধ ঘর অর্থাৎ ছোট বাসা বা ফ্ল্যাট ঘরগুলো যেগুলোতে জানালা থাকেনা বা প্রায়ি বন্ধ থাকে অথবা গাড়ির ভেতরে এছাড়া লিফটের ভিতরে চেষ্টা করবেন মোবাইল ফোনে কথা না বলার। এই সময় মোবাইল থেকে নির্গত রেডিয়েশন খুব তীব্র মাত্রায় প্রতিফলিত হয়ে শরীরে বেশি ক্ষতির প্রতিক্রিয়া ঘটায়। তাই আমাদের উচিত প্রয়োজন না হলে এই সময়ে ফোনে কথা বলার।
৫।শিশুদের থেকে যতটা সম্ভব এই মোবাইল ফোন দূরে রাখতে হবে। কারণ শিশুদের ক্ষেত্রে এই মোবাইল রেডিয়েশন বিশেষ ক্ষতি করে। তবে আজকাল বাচ্চাদের বায়নার সাথে পাল্লা দিয়ে না পেরে তাদের হাতে ধরিয়ে দেই বিভিন্ন দামী দামী স্মার্টফোন আর চিন্তা করি এখন হয়তো আর জ্বালাবেনা। তাই আমরা তাদের বিরক্তি থেকে বাঁচার জন্যে এই ভুল কাজটা করে থাকি। এতে তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৬।যারা গর্ভবতী মা ও বোন রয়েছে তাদের উচিত মোবাইল ফোনে বেশি কথা বলাটা এড়িয়ে যাওয়ার আর ইন্টারনেট পারলে কম ব্যবহার করার। কেননা এই সময় তারা শারীরিক ভাবে দূর্বল থাকে। এই দূর্বল শরীরে তেজস্ক্রিয় রশ্মি আরো বেশি ক্ষতি করে। রেডিয়েশন শক্তি সরাসরি ক্ষতি করে।
উপরোক্ত পদ্ধতিগুলোতে দেখলাম মোবাইল রেডিয়েশন আসোলেই আমাদের শরীরের জন্যে খুব ক্ষতিকর একটি দিক। কিন্তু আমরা বর্তমানে মোবাইল এর উপর এতোটা নির্ভর হয়ে গেছি আমরা মোবাইল ব্যবহার না করলে চলতেই পারিনা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এ বিষয়ে মতামত দিয়েছেন অতিরিক্ত মাত্রায় ফোনে কথা বললে মাথায় ঝিমঝিম করে, কানে ব্যাথা করে, ব্রেইনে নিউরনের সমস্যা হয় ও ব্রেইনের কোষের সমস্যা দেখা দেয়। তাই আমরা এখন থেকে সাবধান হয়ে সীমিত আকারে মোবাইল ফোন ব্যবহার করব।