শরীর স্বাস্থ্য চিকন যেমন ভালো লাগেনা আবার খুব বেশি মোটা হলে ও ভালোলাগেনা। বয়স আর উচ্চতা অনুযায়ী শরীরের একটি নির্দিষ্ট ওজন রয়েছে। সেই ওজনটা কম হলেও সুন্দর না আবার বেশি হলেও ভালো লাগেনা।
যারা চিকন তারা চাই বিভিন্ন উপায়ে মোটা হতে। না জেনে বুঝে যেকোনো কিছু ব্যবহার করে তাড়াতাড়ি মোটা হতে গিয়ে দেখা যায় শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে।
আসুন জেনে নেই
সহজ পদ্ধতিতে মোটা হওয়ার কিছু উপায়ঃ
১। ওজন কেন হ্রাস হচ্ছে তা নির্ণয়ঃ
প্রথমত দেখতে হবে আমাদের বয়স আর উচ্চতা অনুসারে ওজন কি রকম। ওজন ঠিক ঠাক থাকলে সমস্যা নেই। কিন্তু যদি ওজন বেড়ে যায় তাহোলে ওজন কমাতে হবে।
কিন্তু যাদের ওজন ক্রমান্বয়ে হ্রাস পায় তাদেরও ওজন বাড়াতে হবে। ওজন হ্রাস হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে যেমন ঘুম কম হওয়া,অনিয়মিত খাওয়া,ডায়াবেটিস,এইডস,লিভার সমস্যা,যক্ষ্মা,মানসিক দুশ্চিন্তা,ড্রাগ নেয়া,ফুসফুসের সমস্যা,ক্যান্সার ইত্যাদি সমস্যার যারা ভুগছেন তাদের বেশির ভাগেই ওজন হ্রাসের সমস্যা আছে। তাই আগে নির্ণয় করতে হবে ওজন কেন হ্রাস হচ্ছে এবং তার প্রতিকার কি।
২। সঠিক ব্যায়াম করা প্রয়োজনঃ
আমরা জেনে থাকি ব্যায়াম করলে শরীরের ওজন কমে। কিন্তু এইটা কি জানি ব্যায়াম শুধু ওজন কমায় না ওজন বাড়ায় ও বটে। এই ক্ষেত্রে আমরা দক্ষ ফিটনেস ট্রেইনার এর সাহায্য নিতে পারি অথবা যার জিম এ ট্রেইনার তাদের সহায়তা নিতে পারি। তিনি ভালো বলতে পারবেন সুন্দর দেহ গঠনও ওজন পরিপূর্ণ হতে কোন কোন ব্যায়াম করা উচিত।
৩।নিয়মিত খাবার খাওয়াঃ
ওজন যেমন হ্রাস হয় অনিয়মিত খাবারে আবার ওজন বেড়ে যায় নিয়মিত খাবার খেলে। এক্ষেত্রে প্রতি ২ঘন্টা অন্তর অন্তর যদি কিছু খান তাহোলে খাবার নিয়মিত হলো এবং ওজন বাড়তেও সাহায্য করবে।
আপনি এক্ষেত্রে দুধ,দই,ফল,ছানা ইত্যাদি খেতে পারেন। শরীরের পুষ্টিগুণ ও থাকলো ওজন ও বাড়লো।
৪। ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণঃ
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আমরা বলি ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করুন। আবার ওজন বাড়াতে বলি ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার আহার করুন। যারা চাই অতি দ্রুত ওজন বাড়াবেন তারা দিনে ৬০০ থেকে ৭০০ ক্যালরি গ্রহণ করবেন।
আর যারা চিন্তা করেন আস্তে আস্তে ওজন বাড়বে তাহলে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ ক্যালরি গ্রহণ করতে পারেন। তবে হ্যাঁ ক্যালরি বার্ন করে দিবেন না। এক্ষেত্রে যেটুকু বার্ন করেছেন তার দ্বিগুণ গ্রহণ করতে হবে। তাই নিয়মমাফিক ক্যালরি গ্রহণ করুন।
৫। কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করাঃ
আমরা যখন ওজন কমাতে যায় আমাদের প্রথমে বলা হয় ভাত পরিত্যাগ করতে। অর্থাৎ তিন বেলার জায়গায় এক বেলা খেতে বলা হয়। এর পরিবর্তে রুটি খেতে বলা হয়। কেননা ভাত আর রুটিতে কার্বোহাইড্রেট বেশি পরিমাণে থাকে।
যেহেতু ওজন কমাতে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ ও কমাতে বলা হয় সেক্ষেত্রে ওজন বাড়াতে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা ২বেলা ভাত খাওয়াটা দেখতে পারি। তবে হ্যাঁ ফ্যাট এর দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
৬। পর্যাপ্ত ঘুমানোঃ
অনিদ্রা আর টেনশনের জন্যেও অতি দ্রুত ওজন হ্রাস হয়ে যায়। অনেকেই রাত জাগেন গভীর রাত পর্যন্ত। এতে চোখের নিচে কালি পড়ে শরীর দূর্বল হয়ে যায়। আবার ওজন ও কমে যায়। নিয়মিত ৮ঘন্টা ঘুম শরীরের ওজন ঠিক রাখার জন্যে যথেষ্ট জরুরি। এছাড়া ঘুমানোর আগে দুধের সাথে মধু মিশিয়ে খান।
এতে শরীরে পুষ্টিগুণ ও জমা হবে ক্যালরি ও গ্রহণ হবে। আর চেষ্টা করবেন চিন্তামুক্ত হয়ে ঘুমাতে। অনেক সময় নানা চিন্তায় টেনশনে ঘুম হয়না। তাই মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ঘুমান।
৭।ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারঃ
ওজন কমাতে বিশেষভাবে বাইরের খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারে ফ্যাট বেশি থাকে তাই ওজন বেড়ে যায়। তবে যাদের ওজন হ্রাস পায় তারা এই সকল খাবার আহার করতে পারেন। এতে ওজন বৃদ্ধি পায়। তবে সঠিক নিয়মে খেতে হবে। আর চাইলে ড্রাই ফ্রুটস ও খেতে পারেন। বাদাম,কিসমিস এগুলা ওজন বাড়াতে অনেক সাহায্য করে।
উপরোক্ত পদ্ধতি গুলোতে দেখলাম সহজ উপায়ে ওজন বাড়ানোর উপায়। তবে প্রোটিন আর ফ্যাটের মান নির্ণয় করে ওজন বাড়াতে হবে। কেননা ওজন বাড়াতে গিয়ে যদি বেশি বেড়ে যায় তখন স্বাস্থ্যের পক্ষে ঝুঁকি হয়ে যাবে।