খুব সকালে আমরা যখন ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে যাই তখন আমাদের মুখের ব্রন ও ব্রনের দাগ দেখতে খুবই খারাপ লাগে ।
তাছাড়া আপনার চেহারা যতই সুন্দর হোক না কেন আপনার চেহারা যদি একটি ব্রন বা ব্রণের ফলে সৃষ্ট দাগ থেকে থাকে তাহলে আপনার চেহারা দেখতে খুবই বিশ্রী দেখায় ।
ব্রণ ও ব্রণের ফলে সৃষ্ট দাগের ফলে আমাদের মুড অফ, বিরক্তি, মেজাজ গরম এবং নানান ধরনের সমস্যা দেখা যায়, যার ফলে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও এটি প্রভাব ফেলে।
আজকে আমরা আপনাদের সাথে আলোচনা করব আমাদের মুখের ব্রণ কেন হয় এবং ব্রণ দূর করার কিছু ঘরোয়া কার্যকরী উপায়।
ব্রণ কেন হয় বা ব্রণ হওয়ার কারণ:
আমাদের মুখে নানান কারণে ব্রণ হতে পারে তবে তার মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে
প্রথমত :
বয়সন্ধিকালের সময় আমাদের মুখে ব্রণ দেখা যায় 13 থেকে 19 বছর বয়সে মূলত বয়সন্ধিকাল ধরা হয়।
এই এই বয়সন্ধিকালের সময় আমাদের শরীরের নানান দিক হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে ব্রণ দেখা যায়। এইসময় ব্রণ দেখা যাওয়াটা স্বাভাবিক এবং এর জন্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
দ্বিতীয়তঃ
মরা অনেক সময় আমাদের ত্বকের নানান ধরনের কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহার করে থাকি যার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমাদের মুখে ব্রণ দেখা যায়। আমাদের মুখে নানাবিধ কসমেটিক সামগ্রী ব্যবহারের ফলে আমাদের চেহারা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
সাধারণত ব্রণ দেখা গেলে আমাদের দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী । এই ব্যবস্থার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর ব্যবস্থা হল ঘরোয়া উপায়ে ব্রণ দূর করার চেষ্টা করা ।
ব্রণ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় :
ব্রণ দূর করার জন্য নানান ধরনের উপায় রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর এবং গ্রহণযোগ্য উপায় হলো ঘরে থাকা বিভিন্ন রেমিডি মাধ্যমে ব্রণ দূর করা, ঘরে থাকা উপাদান সম্পর্কে বলব যার ব্যবহারে আপনারা খুব সহজে ঘরে বসে আপনাদের মুখ থেকে চিরদিনের জন্য ব্রন ও ব্রনের দাগ দূর করতে পারবেন।
শসা:
শসাতে মূলত আমরা সালাত হিসেবে বেশি ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না শসা কে আমরা নানান ভাবে রূপচর্চা কাজে ব্যবহার করতে পারি।
শসাতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি এবং ই যা আমাদের ত্বকের জন্য খুবই ভালো ।
ব্যবহারঃ
শশাকে ব্লেন্ড করে আপনি আপনার ব্রণের জায়গা 20 মিনিট লাগিয়ে রাখতে পারেন এতে করে আপনার ব্রণ দ্রুত সেরে যাবে। তাছাড়া শসাকে গোল গোল করে কেটে আপনার ব্রণ ওটা জায়গায় লাগিয়ে রাখতে পারেন তাহলে আপনি খুব ভালো ফলাফল পাবেন।
তারপর আপনারা ভালো করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ফেলতে পারেন। এই প্রক্রিয়াটি দৈনিক দুই থেকে তিনবার করে এক সপ্তাহ টানা ব্যবহার করলে আশাকরি আপনাদের ব্রণ সেরে যাবে।
লেবুর রস:
লেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক এসিড ব্রণ এবং ব্রণের ফলে সৃষ্ট দাগ দূর করার জন্য খুবই কার্যকরী।ব্যবহারঃ
আপনার প্রতিদিন সকালে লেবুর রসে তুলো ভিজিয়ে আপনার ব্রণের স্থানগুলোতে ভালোভাবে লাগাতে পারেন এর কিছুক্ষণ পর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে পারেন।
তবে যাদের স্কিন সেনসিটিভ তারা কখনোই এই লেবুর রস চেহারায় লাগাবেন না।
বরফ:
বরফ ত্বক হতে ব্রণ দূর করতে খুব ভাল কাজ করে।
ব্যবহারঃ
একটি মাঝারি আকারের বরফ টুকরো নিয়ে তার ওপর একটি পাতলা কাপড় পেচিয়ে আপনার ব্রণযুক্ত স্থানে ভালোভাবে মালিশ করুন ।
এভাবে 5 মিনিট অন্তর অন্তর দৈনিক দুই থেকে তিনবার আপনার ব্রণযুক্ত স্থানের বরফ দিয়ে মালিশ করলে আপনার চেহারা থেকে খুব দ্রুত ব্রণ দূর হয়ে যাবে।
নোটঃ
১। যাদের ঠান্ডার সমস্যা আছে তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার না করার অনুরোধ রইলো ।
২। তাছাড়া শীতকালেও এই পদ্ধতির আপনারা ব্যবহার না করতে পারেন।
টুথপেস্ট:
দ্রুত ব্রণ সারাতে টুথপেস্টের কোন বিকল্প নেই বললেই চলে । ব্রণ দূর করতে টুথপেস্ট ব্যবহার করতে পারেন ।
টুথপেস্ট এতটাই দ্রুত কাজ করে যে এটা প্রথম ব্যবহারেই আপনি ভালো ফলাফল পাবেন।
ব্যবহারঃ
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার ব্রণযুক্ত স্থানে অল্প একটু টুথপেস্ট ভালভাবে লাগিয়ে নিতে পারেন, এতে করে আপনার বর খুব দ্রুত সেরে যাবে।
তবে সম্পূর্ণ ব্রণ দূর করতে এই পদ্ধতি আপনি সপ্তাহ খানেক ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
মধু:
মধুকে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক বলা হয় যা ব্রণের বাতি তরল পদার্থ দ্রুত কমিয়ে দিতে সাহায্য করে । একটি সাদা ব্যান্ডেজ এর ওপর মধু লাগিয়ে তা আপনার ব্রণযুক্ত স্থানে লাগিয়ে রাখতে পারেন ।
তারপর অল্প কিছুক্ষণ পর এটি মুখ ভালো ভাবে নিবেন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে আপনার মুখ থেকে চিরদিনের জন্য দূর হয়ে যাবে।
চন্দন:
চন্দন গোড়াই রয়েছে জীবাণুনাশক উপাদান, যা আমাদের মুখ থেকে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ খুব দ্রুত দূর করে দিতে সাহায্য করে।
ব্যবহারঃ
প্রতিদিন সকালে বা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে অল্প একটু চন্দন গুঁড়োর সাথে গোলাপজল বা পানি মিশিয়ে, আপনার চেহারায় ভালভাবে লাগিয়ে নিতে পারেন। যখন চন্দন গুঁড়া আপনার চেহারায় ভালোভাবে শুকিয়ে যাবে তখন ভালোভাবে মুখ দিয়ে নিবেন।
নিম পাতা:
নিম পাতা খুবই জীবানুনাশক একটি উপাদান। ব্রণ সারাতে নিম পাতা খুবই উপকারী। নিমপাতা বেটে আপনার ব্রণযুক্ত স্থানে নিয়মিত লাগাতে পারেন তাহলে আপনার ব্রণ খুব দ্রুত সেরে যাবে।
রসুন:
রসুন ব্রণের বড় শত্রু হিসেবে পরিচিত। রসুনের ব্যবহারও খুবই সহজ, একবার দু’কোয়া রসুন দুটো করে কেটে নিন, তারপর ব্রণযুক্ত স্থানে এটি মিনিট লাগিয়ে রাখুন ।
তারপর আপনার মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিতে পারেন। এই পদ্ধতি দু-তিনদিন ব্যবহারের ব্রণ দ্রুত কমে যাবে।
ধনেপাতা:
ধনেপাতা ও ব্রণ সারানোর জন্য কার্যকর একটি উপাদান। প্রতিদিন সকালে অল্প একটু ধনেপাতা বেটে তার সাথে অল্প হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে আপনার ব্রণযুক্ত স্থানে ভালভাবে লাগিয়ে রাখতে পারেন।
২০ থেকে ২৫ মিনিট পর আপনি ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিতে পারেন । এই পদ্ধতি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আপনার মুখ থেকে দ্রুত ব্রণ সেরে যাবে।