বৈজ্ঞানিক নাম Olea europaea একে সাধারণত জয়তুন (যয়তুন) ফল বলা হয়। যুদ্ধে জয়তুনের পাতাকে শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং শরীরে শান্তির দূত হিসেবে জয়তুনের তেল ব্যবহার করা হয়।
আরবিতে জয়তুনকে তরল সোনা নামে ডাকা হয়। জয়তুন ফল গাছ ৮ থেকে ১০মিটার উচ্চতায় লম্বা হয়ে থাকে। এর পাতা উচ্চতায় ৪ থেকে ১০ সেমি. লম্বা এবং প্রশস্ততায় ১ থেকে ৩ সেমি. প্রশস্ত হয়ে থাকে। জয়তুন ফল আকারে বেশ ছোট হয়। সাধারণত ১ থেকে ২.৫ সেমি. লম্বা হয়ে থাকে।
এই গাছের ফলন ভূমধ্য সাগর অঞ্চলে বেশি। আর জয়তুন তেলের কারণে আর মান বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেকে আবার জলপাই আর জয়তুন ফলকে একসাথে মিলিয়ে ফেলে। কিন্তু জলপাই এর মধ্যে যে কালো জাত জলপাই আছে তা থেকে এই জয়তুন তেল তৈরি হয়।
তাই জয়তুন আর জলপাই দেখতে একই রকম হলেও একই রকম না। মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনে এই যয়তুন ফলের কথা বলা হয়ে।
আসুন জেনে নেই জয়তুন ফলের উপকারিতাঃ
১।জয়তুন তেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। যাদের ভিটামিন ই এর অভাব রয়েছে তারা জয়তুন তেল খেতে পারেন।
২।জয়তুনের তেলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস যা আমাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। রক্তে কোলেস্টেরল দূর করে আমাদের রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে জয়তুন তেল খেতে হবে।
৩। জয়তুন তেল রক্তশূন্যতা রোধে বিশেষভাবে কাজ করে। সাধারণত মেয়েদের এই সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়। নিয়মিত জয়তুন তেল সেবন করলে তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়া যায়।
৪। বিভিন্ন ধরণের টিউমার, রগ ফুলে যাওয়া, কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা, দাঁতের ক্যাভিটি এমনকি ক্যান্সারের রোগ সহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন।
৫।গর্ভবতী মায়েরা গর্ভাবস্থায় নিয়মিত জয়তুন তেল দিয়ে শরীরে মালিশ করতে পারেন এতে বাচ্চাদের জন্মের দাগ পড়েনা।
এছাড়া বাচ্চা জন্মদানের পর মেয়েদের ত্বকে সাদা গাদের ছাপ পড়ে যায়। জয়তুন তেল মালিশের ফলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৬। চুলের সৌন্দর্য বর্ধনে জয়তুন তেল বিশেষ ভূমিকা রাখে। জয়তুন তেল হাতের তালুতে নিয়ে মাথায় ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন ও বৃদ্ধি পায়।
এছাড়া চুল ও দাঁড়িয়ে জয়তুন তেল মাখলে চুল ও দাড়ি পাকার প্রবণতা অনেকাংশে কমে যায়।
৭। আজকাল বয়স বাড়ার আগে বয়সের ছাপ পড়ে যায় এবং বয়সেএ তুলনায় বয়সের তারতম্য বেড়ে যায়।
এক্ষেত্রে আপনি মুখের ত্বকে জয়তুন তেল ব্যবহার করতে পারেন।আপনার বয়সের ছাপ কমাবে।
৮। জয়তুন তেল শুধু শরীরের জন্যে না রন্ধন প্রণালীতে বিশেষ তেল হিসেবে ও ব্যবহার করা হয়। তবে জয়তুন তেলের দাম সচরাচর অনেক বেশি হয়ে থাকে।
এছাড়া চিকিৎসাশাস্ত্রে এই জয়তুন তেল ব্যবহার করা হয়। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) ও জয়তুন তেল ব্যবহার করতেন। তাই এই তেলের আলাদা গুণাগুণ রয়েছে।
৯।প্রতিদিন খাবারে যদি ২চামচ করে জয়তুন তেল খেলে ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় আর উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায়।
এছাড়া নিয়মিত খেলে ক্লোম ক্যান্সারের ঝুঁকি ও কমে যায়। গোসলের সময় ১ থেকে ৪চামচ গোসলের পানিতে জয়তুন তেল দিলে শরীরের শীথিলতা পাওয়া যায়। এছাড়াও ব্যাথানাশক হিসেবে জয়তুন তেল আরো বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে।
১০। জয়তুন ফলে রয়েছে অলেইক এসিড যা আমাদের হার্টকে ভালো রাখে এবং হার্টের সুরক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া বৈবাহিত জীবন যাপনে স্ত্রী পুরুষ ২জনের যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি ও প্রজনন প্রক্রিয়াতে বিশেষভাবে সাহায্য করে জয়তুম তেল।
তাছাড়া মেয়েদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জয়তুন তেল বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উপরোক্ত পদ্ধতিতে আমরা জয়তুন তেলের বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারলাম। যেহেতু জয়তুন তেলের দাম বেশি চেষ্টা করন জয়তুন তেল পরিমাণ মতো না খেতে পারলে ও সীমিত আকারে খাওয়ার। এতে শারীরিক বিভিন্ন উপকারিতা লাভ করা যায়