বর্তমানে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে ব্রণের সমস্যা বেশি দেখা যায়। এবং এই ব্রণ চলে গেলেও অনেক সময় দাগ থেকে যায়। এটি হলো Acne problem. বয়ঃসন্ধির শুরুতেই এই ব্রণের সমস্য দেখা দেয়। তবে একসময় ব্রণের পরিমাণ কমে যায়। সাধারণত হরমোনাল ইমব্যালেন্স অর্থাৎ হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্যেই ব্রণ হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া অনেক সময় মুখের যে প্রসাধনী ব্যবহার করা হয় তা থেকেও এই ব্রণের সমস্যা হয়ে থাকে। আর মেয়েরা তো বেশির ভাগেই আচার জাতীয় ভোজ্য তেলের খাবার বেশি খেয়ে থাকে এগুলা থেকেও ব্রণের সমস্যা বেড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে। তবে আমরা ব্রণ থেকে চিরতরে মুক্তি না পেলেও খাবারের প্রতি কিছু সচেতনতা বৃদ্ধি করলে এই সমস্যা অনেকাংশে রোধ করা যেতে পারে।
আসুন জেনে নিই ব্রণ থেকে পরিত্রাণের জন্যে খাদ্য সম্পর্কে সচেতনতাঃ
১।ব্রণের থেকে বাঁচার জন্যে পানির কোনো বিকল্প নেই। ডাক্তারেরা ও পরামর্শ দেন বেশি করে পানি পান করার। তবে যারা খালি পানি পান করতে পারেন না তারা মিশ্রণ তৈরি করে পানি খেতে পারেন।যেমন ঘুমানোর আগে আধা চা চামচ আমলকীর গুঁড়া পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। এছাড়া আমরা যারা ৩বেলা খাবার খায় ধনে জির ও মৌরিকে একসাথে ১ থেকে ৩ চামচ মিশিয়ে গরম পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে খেতে পারেন।
২।ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত লবণ জাতীয় খাবার, অ্যালকোহল জাতীয় খাবার, মিষ্টি জাতীয় ও মশলা জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। এর পরিবর্তে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ভাত, ওটমিল, ফলমূল, আঁশ জাতীয় খাবার ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন আর সাথে ৮ থেকে ১০গ্লাস পানি তো আছে। এতে শরীরে জমে থাকা টক্সিন ও কেমিকেল দূর করে।
৩।অনেক সময় বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ,স্টারয়েড ও ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ওষুধ ও ব্রণের জন্যে দায়ী। এছাড়া অনেক প্রসাধনী আছে যা আমাদের মুখের ত্বকের সাথে খাপ খায়না। সেগুলা ব্যবহারের ফলেও মুখে ব্রণ উঠে। তাই সেসকল প্রসাধণি এড়িয়ে চলাই ভালো। আর ওষুধ খাওয়ার সময় নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত খেতে হবে।
৪।ভিটামিন সি আমাদের শরীরে কোষ কলা ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৃদ্ধি ঘটায়। কিন্তু আমাদের শরীর নিজে নিজে ভিটামিন সি এর উৎস তৈরি করতে পারেন। এই ভিটামিন সি ব্রণ থেকেও বাঁচতে সাহায্য করে। কোষ ও ত্বক ভালো রাখে। আমরা এই ক্ষেত্রে কমলা খেতে পারি এটি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল। এছাড়া মাশরুম হলো জিংকের উৎস যা ব্রণ কমাতে সাহায্য করে। পেঁপে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ফল। এছাড়া পেঁপে খেলে লোমকূপ খুলে যায়। ত্বকের দাগ কমে যায় ও ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখে।
৫।আমাদের অনেকের বাসায় অ্যালোভেরা কিংবা ঘৃতকুমারী গাছ রয়েছে। এই অ্যালোভেরা মুখের ব্রণ ও দাগ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এই গাছের পাতার মধ্যে যে জেল টি রয়েছে তা নিয়ে মুখে ম্যাসাজ করুন। ভালো ফলাফল পেতে দৈনিক ব্যবহার করুন। এতে কোনো ত্বকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
৬।সাদা রুটি, আলুভাজা, গরুর দুধ, তেলজাতীয় খাবার, মিষ্টি, ভুট্টার গুঁড়া ইত্যাদিতে রয়েছে আমীষ ও প্রোটিনের সংমিশ্রণ বেশি। এই খাবার অতিরিক্ত খেলে আমাদের ফ্যাটের সমস্যা ও বেড়ে যায়। এতে মুখে তৈলাক্ত ভাব দেখা যায় এই তৈলাক্ত ভাবের জন্যেও মুখে ব্রণের সংখ্যা বেড়া যায়।
৭।যারা রোজ রোজ বের হোন বাসা থেকে তারা অবশ্যই সাথে পানি রাখবেন আপনার ক্লান্তিহীনতা দূর করবে। কেননা বাইরের ধূলাবালি ত্বকের উপর জমাট হয়ে আস্তরণ পরে।এতে মুখের ত্বকের চিটচিটে হয় যায়। এতে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেললে আর সেই চিটচিটে ভাব থাকেনা। এবং পানি পান ও করা যেতে পারে এতে পানি মুখের ব্রণের সমস্যা ও কমাবে।
উপরোক্ত পদ্ধতি হতে বুঝতে পারলাম, ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের কোনো বিকল্প নেই। তাই আমাদের অস্বাস্থ্যকর খাবার পরিহার করতে হবে। এতে আমাদের ত্বক ও শরীর ভালো থাকবে। আর বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।