ঘি হলো দুগ্ধজাত খাবার। আর বাঙালী খাদ্যপ্রিয় মানুষ গরম ভাতের সাথে ঘি হলে তো কথায় নেই। ভাতের সাথে ঘি খেলে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত শক্তি শরীরে বহাল থাকে।
এছাড়া খাদ্যের স্বাদ বাড়াতে আমরা রান্নার কাজে ঘি ব্যবহার করি।তবে অতিরিক্ত ঘি খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। নিয়ম মেনে ঘি খেলে শরীরের ক্ষতি হয় না। ভারতীয় উপমহাদেশে মাখন থেকে পরিশোধিত হওয়া ঘি কে তারা খাবারের সাথে ব্যবহার করেন।
আসুন জেনে নিই ঘি খাওয়ার উপকারিতাঃ
১/ চুল পড়া প্রতিরোধে সাহায্য করেঃ
যাদের অতিরিক্ত চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে তারা চাইলে খালি পেটে ঘি খেতে পারেন।ঘি খেলে চুলের স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। ঘি চুলকে নরম ,উজ্জ্বল করে এবং চুল পড়া প্রতিরোধে সাহায্য করে।
২/স্ফুটানাঙ্ক অনেক বেশিঃ
ঘি এর স্ফুটানাঙ্ক অনেক বেশি।সাধারণত ২৫০ ডিগ্রি সেন্টগ্রেড পর্যন্ত খাঁটি ঘি গরম করা যায়। তবে তেলকে এই সময় পর্যন্ত গরম করলে তেল ক্ষতিকারক হয়ে যায়।
৩/ স্মৃতি শক্তি বাড়ায়ঃ
ঘি প্রায় ১০০ বছর পর্যন্ত ঠিক থাকে। সহযে নষ্ট হয় না। ঘি তে রয়েছে ব্রেন টনিক। যা আমাদের স্মৃতি শক্তি বাড়ায়।
৪/ হাড়ের ও হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বাড়ায়ঃ
ঘি তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ,ডি,ই ও কে এর পুষ্টিগুণে ভরপুর। এই ভিটামিনগুলো হাড়ের ও হৃদপিন্ডের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
৫/ ত্বকের যত্ন করেঃ
ত্বকের যত্নে ঘি এর বিকল্প নেই। রাতে ঘুমানোর আগে চোখের আশেপাশে ও সারা মুখে ঘি এর প্রলেপ দেয়া যাবে। এটি ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে।এটি বিশেষ করে ত্বকে শুষ্কতা দূর করে। অল্প ঘি নিয়ে ঠোঁঠে হালকা ম্যাসাজ করুন। এতে ঠোঁঠ গোলাপী হবে।
৬/কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা দূর করেঃ
যাদের কোষ্টকাঠিন্যের সমস্যা বেশি অথবা পেটের সমস্যা রয়েছে তারা ঘি খেতে পারেন। এক কাপ দুধের মধ্যে ১ চামচ ঘি মিশিয়ে কিছুক্ষনের জন্যে চুলার উপর রাখুন। রাতে ঘুমানোর আগে খেয়ে নিন।
৭/রোগ প্রতিরোধে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখেঃ
যেহেতু ঘি সহযে নষ্ট হয়না তাই ঘি রোগ প্রতিরোধে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখে। ঘিতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস।যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কেননা ঘি এর পুষ্টিগুণ অনেক দিন পর্যন্ত ঠিকে থাকে।
৮/ হজম শক্তি বাড়ায়ঃ
ঘি তে রয়েছে প্রচুর বাইটারিক এসিড।যা আমাদের খাবার তাড়াতাড়ি হজম করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এছাড়া ঘিতে রয়েছে ফ্যাটি এসিড যা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং শক্তি অনেক্ষন পর্যন্ত সঞ্চয় করে রাখে। যারা নিমিত খেলাধুলা করেন তারা খেলার আগে ঘি খেয়ে থাকেন।
৯/ ক্ষত সারাতে সাহায্য করেঃ
ঘিতে রয়েছে উপকারী কোলস্টেরল। কোলস্টেরল সাধারণত ২ প্রকার। উপকারি কোলস্টেরল আর ক্ষতিকর কোলস্টেরল। ঘিতে রয়েছে কনজুগেটেড লিলোনেক এসিড।এটি অ্যান্অক্সিডেন্টের অ্যান্টি ভাইরাল। যা ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। যেসকল মা বোনেদের ডেলিভারি হইয় তারদের ঘি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
১০/ আমরা জেনে থাকি ওজন বেড়ে গেলে তেল ঘি জাতীয় খাবার না খেতে। কিন্তু এটি ভুল কথা। ঘি তে আছে মিডিয়াম চেন ফ্যাটি এসিড। যা আমাদের শরীরে শক্তি বর্ধনে সাহায্য করে। যারা খেলোয়ার তারা খেলাধূলার আগে নিয়মিত ঘি খেয়ে দৌড়াদৌড়ি করেন। এতে শক্তি ও সঞ্চয় হলো আর ওজন ও কমিয়ে ফেলে।কেননা ঘিতে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড আমদের ক্ষুধা নিবারণ করে। ক্ষিধা লাগার প্রবণতা কমে যায়। এতে দেহের ওজন ও সঠিক তাকে। এছাড়া ঘিতে থাকা বাইটারিক এসিড আমাদের শরীরে খাদ্য হজমে সাহায্য করে।
উপরোক্ত পদ্ধতিতে আমরা দেখলাম ঘি এর বিভিন্ন উপকারিতা এবং ঘি কি কি কাজে ব্যবহৃত হইয়। খেয়াল রাখতে সকল খাদ্য উপাদান আমাদের শরীরের জন্যে উপকারী। তবে তা নিয়ম মেনে খেতেহবে। সকল খাদ্য উপাদান নিয়ম মেনে খেলে আমাদের শরীরের খাদ্য উপাদান সঠিক মানে থাকে। এতে কোনো খাদ্য উপাদানে আমাদের শরীরের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটায় না।