বর্তমান সময়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই তাদের রূপচর্চা নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। তাই তারা কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের পরিবর্তে কিভাবে ঘরে বসে শসার উপকারিতা প্রাকৃতিক উপায়ে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করা যায় সে বিষয়ে সতর্ক হচ্ছেন।
ঠিক তেমনি একটি প্রাকৃতিক গুণাবলীসম্পন্ন রূপচর্চায় ব্যবহৃত উপাদান হচ্ছে শসা। শসা আমাদের শরীরের জন্য যেমন উপকারী ত্বকের জন্য ঠিক ততটাই উপকারী। রূপচর্চায় গবেষক এবং বিউটিশিয়ানরা শসার ব্যবহার করে আসছেন বহুকাল ধরেই।
কেননা শসা আমাদের ত্বককে রাখে মসৃণ, কোমল, আকর্ষণীয় ও উজ্জ্বল। যারা আমাদের রূপচর্চায় শসার উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্যই আমাদের এই আলোচনা। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক। ত্বককে সুস্থ মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে শসার উপকারিতা সমূহ।
ত্বককে সুস্থ, মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখতে শসার উপকারিতা সমূহঃ
রোদে পোড়া দাগ দূর করেঃ
সূর্যের আলোর তাপের অতিবেগুনি রশ্মির কারণে আমাদের বিভিন্ন সময়ে পুড়ে যায়। শসা ত্বকের এই সমস্ত পোড়া দাগ দূর করে ত্বককে রাখে সম্পূর্ণ এবং মসৃণ ।
আমাদের ত্বকে সূর্যের হাত থেকে বাঁচাতে শসা অত্যন্ত উপকারী। তাই প্রতিদিন বাহির থেকে এসে শসা স্লাইস করে মুখের উপর ঘষে নিন। অথবা শসার রস দিয়ে আইস কিউব তৈরী করে রাখুন এবং বাহির থেকে এসে তা মুখে ঘষে নিন।
শসা ত্বকে পানিশূন্যতা কমায়ঃ
নিয়মিত শসা ব্যবহারে ত্বকের কোষে পানি শূন্যতা কমে যায়।যার ফলে ত্বক থাকে সম্পুর্ণ সতেজ ও সজীব। শসার রস আমাদের ত্বকের মৃত কোষ গুলোকে সরিয়ে নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে।
ফলে আমাদের ত্বক থাকে সুস্থ, সুন্দর,মসৃণ এবং উজ্জ্বল।
ত্বককে উজ্জ্বল করতে শসাঃ
শসায় রয়েছে বিভিন্ন ধরণের এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে যা আমাদের ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের কোষে শক্তি যোগায় ফলে আমাদের ত্বক হয়ে ওঠে স্থায়ীভাবে উজ্জ্বল ফর্সা সুস্থ এবং মসৃণ।
তাই ত্বক সুস্থ এবং সুন্দর রাখার জন্য শসা অত্যন্ত উপকারী।
বলিরেখা দূর করেঃ
শসায় রয়েছে ভিটামিন কে এবং ভিটামিন সি যা আমাদের ত্বককে টানটান রাখতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ এবং বুড়িয়ে যাওয়া ভাব ও বিভিন্ন ধরনের দাগ, বলিরেখা সম্পূর্ণরূপে দূর হয়ে ত্বক থাকে সম্পূর্ণ মসৃণ ও আকর্ষণীয়।
শসা সেনসিটিভ ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী এটি সেনসিটিভ ত্বকের এবং বিবর্ণ ভাব সম্পূর্ণ দূর করে ত্বক কে উজ্জ্বল ও মসৃন করতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত তৈলাক্ততা দূর করেঃ
শসা ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ততা দূর করে ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে। ফলে আমাদের ত্বক অতিরিক্ত তেল চিটচিটে হয়ে না।
যার ফলে বিভিন্ন ধরনের ময়লা এবং ধুলাবালি থেকে আমাদেরকে রক্ষা পায়। এবং আমাদের ত্বক থাকে সুস্থ, সুন্দর, আকর্ষনীয় এবং মসৃণ।
ত্বকের ব্যাকটেরিয়া দূর করেঃ
শসায় বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান এবং ভিটামিন সি আমাদের ত্বক থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া সমূহ সম্পূর্ণরূপে দূর করে।
এটি আমাদের ত্বকে ঘষে ময়লা জমতে দেয় না যার ফলে আমাদের ত্বক থাকে সম্পূর্ণ সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক এবং মসৃণ। তাই ত্বক সুস্থ, মসৃণ এবং উজ্জ্বল করতে শসা অত্যন্ত উপকারী।
ব্রণ এবং ব্রণের দাগ কমাতে শসাঃ
শসা ব্রণ এবং ব্রণের দাগ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। কারণ শসায় রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ভিটামিন সি ত্বকের এর বিভিন্ন দাগ, কালো দাগ, ব্রণের দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করে ত্বককে রাখে দাগ মুক্ত।
শসার রস আমাদের ত্বক থেকে ময়লা দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখায় ব্রণ অনেকাংশেই দূরীভূত হয়। ফলে ত্বক থাকে সুস্থ সুন্দর, মসৃণ এবং উজ্জ্বল।
ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর করেঃ
শসা এবং শসার বিভিন্ন ধরনের ফেসপ্যাক শুষ্ক ত্বকের যত্নে অত্যন্ত কার্যকরী। শসার রস শুষ্ক ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে ত্বককে মসৃণ এবং বিবর্ণ হতে দেয় না।
যার ফলে শুষ্ক ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর, সুস্থ, মসৃণ এবং আকর্ষণীয়।
শসা ডার্ক সার্কেল দূর করেঃ
চোখের ডার্ক সার্কেল দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল এবং ভরসা রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাকৃতিক উপাদান।
নিয়মিত শসার স্লাইস অথবা শসার আইস কিউব ব্যবহারে তবে চোখের ডার্ক সার্কেল এবং কালো দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর হয়।। ফলে ত্বক থাকে দাগ মুক্ত ত্বক উজ্জ্বল সুন্দর এবং মসৃণ।
চোখের ফোলা ভাব দূর করতে শসাঃ
আমাদের চেহারার সৌন্দর্য শুধুমাত্র তাকেই সীমাবদ্ধ নয়। চোখের ফোলা ভাব নিয়ে বিভিন্ন সময় আমাদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।
নিয়মিত শসার স্লাইস চোখে দিয়ে ঘুমালে চোখের ফোলা ভাব অল্প ক’দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণভাবে দূর হয়ে যায়। চোখ হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় এবং সুন্দর। আর আপনার ত্বক থাকে মসৃণ, উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়।
ত্বক টানটান রাখেঃ
শসার রস ত্বকের জন্য টোনার হিসেবে কাজ করে। ফলে আপনার ত্বক থাকে টান টান। তাই শসার রস নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বকে ভাঁজ পড়ে যায় না এবং কুঁচকে যাওয়া থেকে আপনার ত্বক রেহাই পায়।
শসা একটি সম্পুর্ন প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এটি ব্যবহারে ত্বকে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। আর শশা সব ধরনের ত্বকের যত্নে উপযোগী। শসা আমাদের ত্বকে শুধু দাগ মুক্ত ফর্সা ও উজ্জ্বল করে না তার সাথে সুস্থ রাখে। তাই নিজেদের ত্বকের যত্নে শসা ব্যবহার করুন।