চুল হলো স্রষ্টাপ্রদত্ত একধরণের উপহার। চুলে মানুষের সৌন্দর্য আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। আর মেয়দের ক্ষেত্রে চুল তো আরো বেশি জরুরি। বলা হয় নারীর এলো কালো কেশে নারী সৌন্দর্য ফুটে ওটে। শাড়ি পরে যদি চুলগুলোকে খুলে দিয়ে হাওয়ায় ছড়িয়ে দিই এতে সৌন্দর্যময় আরো বেড়ে যায়। কিন্তু ইদানীং আমাদের চুলে সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে। নতুন চুল গজায় না, চুল পড়ে যায়, অল্প বয়সে চুল পেকে যায়, চুলের রুক্ষতা, খুশকি আরো বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে চুল নিয়ে। চুলের অযত্ন এবং কিছু উপায় সঠিক ভাবে না জানার ফলে আমাদের চুলের সমস্যা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্যে আমাদের চুলের সঠিক পরিচর্যা ও সঠিল নিয়ম মেনে চলতে হবে।
আসুন জেনে নিই নতুন করে চুল গজানোর কয়েকট উপকারি পদ্ধতি
১।আমাদের নিত্যপ্রয়োজনের ঝামেলাতে আমারা ভালো করে চুলের যত্ন নিতে পারিনা। চুলের জন্যে প্রথমে প্রয়োজন ম্যাসাজ। ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে আমরা ভিটামিন ই কিংবা তেল দিয়ে হালকা ভাবে ম্যাসাজ করতে পারি। ৫ থেকে ৬মিনিট ম্যাসাজ করে চুলকে ছোট ছোট করে ভাগ করে চুল আঁচড়াবেন। এরপর ভালোভাবে শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন।নতুন চুল গজানোর জন্যে নিয়মিত ৩বার চুলে ম্যাসাজ করবেন তবে হ্যাঁ প্রত্যেকবার চুলে শ্যাম্পু দিতে হবেনা। ভালো করে চুল ধুয়ে নিবেন।
২।আমরা চুলে শ্যাম্পু করি কিন্তু ভালোভাবে শ্যাম্পু করতে পারিনা। অর্থাৎ স্ক্যাল্পের মৃত কোষগুলোকে ঝড়াতে পারিনা। এগুলা নতুন চুল গজাতে বাঁধা দেয়। তাই স্ক্যাল্পে আগে ভালোভাবে শ্যাম্পু দিগে ম্যাসাজ করে মৃত কোষগুলোকে ঝড়িয়ে ফেলতে হবে। তবে চুলে শ্যাম্পু করার পরে সাথে সাথে চুল আঁচড়াবেন না তখন চুলের গোড়া নরম থাকে এতে চুল ঝড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৩।নতুন চুল গজানোর জন্যে আমরা কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারি। কালোজিরার তেল নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এছাড়া আমরা নারকেল তেল ও ব্যবহার করি।
৪।নতুন চুল গজানোর জন্যে আমরা খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, আয়রন, জিংক ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।পেয়ারা,লেবু,কমলা এগুলা হলো ভিটামিন সি জাতীয় খাবার। মটরশুঁটি, বাদাম, কলিজা এগুলার মধ্যে রয়েছে আয়রন ও জিংক। আয়রণ আমাদের মাথায় অক্সিজেন কোষ পরিবহন করে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।মাছ, মাংস, ডিম, পনির, দুধ এগুলাতে রয়েছে আমিষ ও প্রোটিন এগুলাও আমাদের নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।এই খাদ্য উপাদান শুধু চুল গজাতে না আমাদের শরীরে খাদ্যউপাদানের ঘাটতি পূরণে ও সহায়তা করে।
৫।শুকনো আমলকীকে ভিজিয়ে ভেজা আমলকীর রস চুলে দিতে পারেন। মেহেদী পাতাকে ভালোভাবে বেটে সেটাকে মাথায় প্রলেপ হিসেবে দেয়া যেতে পারে। এতে মাথা ঠান্ডা থাকে আর নতুন চুল গজায়। নতুন চুল গজানোর জন্যে আমরা পেয়াজের রস ও ব্যবহার করতে পারি। পেয়াজের রস নিয়ে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করলে নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। বাসায় ঘৃতকুমারী থাকলে ঘৃতকুমারীতে থাকা জেল ও হাতের আঙ্গুলে নিয়ে ম্যাসাজ করতে পারেন।
৬।বর্তমানে চুলের আরেকটি বিশেষ সমস্যা হলো চুলে খুশকি। এটি মূলত এক ধরণের চর্মরোগ। যা নারী পুরুষ উভয়ের হয়। মাথার ত্বকে এক ধরণের ছত্রাক বা ইস্ট জীবাণুর কারণে এই খুশকি হয়। অনেকের আবার বংশগত খুশকি হয়। খুশকি হলে চুলকানি বেড়ে যায় ফলে চুল পড়ে যায়। এই সমস্যা টাকে অনেকে সাধারণভাবে নেই। তবে এর সমাধান রয়েছে। খুশকি হলে আমাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চুলের যত্ন নিতে হবে।
৭।চুলের উকুন হলো চুল না গজানোর আরেকটি বিশেষ সমস্যা। যারা ভেজ চুল বেঁধে রাখেন, চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করে না,অন্যের ভেজা গামছা,তোয়ালে বা চিরুনি ব্যবহার করলে উকুন হয়।আর উকুন আমাদের মাথার ত্বকের রক্ত খেয়ে বেঁচে থাকে ফলে এটি চুলের পুষ্টিগুণ নষ্ট করে এবং চুলের গোড়া নরম করে। তাই উকুন থেকে বাঁচতে হলে উপরের অভ্যাস গুলো ত্যাগ করতে হবে। এক্ষেত্রে ঊকুননাশক ও ব্যবহার করা যায় যদি এলার্জি সমস্যা না থাকে।
একটা কথা আমরা সকলে জানি যত্ন করলে নাকি রত্ন ও পাওয়া যায়। যদি আমরা ভালোভাবে চুলের যত্ন করি তাহোলে আমরা নতুন, ঘন ও কালো চুল পেতে পারি। তবে আমরা যে পদ্ধতিই অবলম্বন করি না কেন চুল ভালোভাবে ধোয়া,পরিষ্কার রাখতে হবে।