জলপাই তেল যাকে ইংরেজীতে বলা হয় অলিভ অয়েল। তবে অলিভ অয়েল হিসেবেই বহুল প্রচলিত। সাধারণত জলপাই কে পুরোপুরিভাবে পিষে এই তেল তৈরি করা হয়।
এই তেলের পুষ্টিগুণ স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারী থাকায় স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে হাজার বছর এই অলিভ অয়েল ব্যবহার হয়ে আসছে। শুধু শরীর না নানান ধরণের খাবার তৈরিতে এই তেল ব্যবহার করা হয়।
জলপাই গাছের ফলন ভূমধ্যসাগর অঞ্চল গুলোতে বেশি। ১চামচ জলপাই তেলে যেসকল উপাদান রয়েছে তা হলো ক্যালরি ১৯৯, ফ্যাট ১৩গ্রাম, ৮.১ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন কে, ১.৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই।
আসুন জেনে নিই অলিভ অয়েল বা জলপাই তেলের উপকারিতাঃ
১। মেয়েদের চুলের সমস্যা সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। চুলের আগা ফেটে যাওয়া, চুলের খুশকি ইত্যাদি। চুলের খুশকি সমস্যা থাকলে সপ্তাহে ২দিন অলিভ অয়েল এবং কয়েক ফোটা লেবুর রস নিয়ে ম্যাসাজ করুন। এতে খুশকির সমস্যা দূরিভূত হবে।
এছাড়া যাদের চুলের আগা ফেটে যায় আর গোড়া নরম তারা নারকেল তেলের সাথে জলপাই তেল মিশিয়ে চুলের নিচের অংশ চুবিয়ে রাখুন। এতে চুল নরম থাকে আগা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা ও কমে যায়।
২। অলিভ অয়েলে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের ত্বকে ময়শ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। অন্যান্য তেলের তুলনায় অলিভ অয়েল হাল্কা যা সহযে ত্বকে মিশে যায়।
তাই আমরা চাইলে রাতে শোয়ার আগে মুখে কিংবা হাতে পায়ে কয়েকফোটা অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করতে পারি। যার ফলে অনেল বয়স হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ত্বক মসৃণ ও টান টান থাকে।
৩। হাতের আংগুলের সৌন্দর্য বর্ধনে মেয়েরা সাধারণত নেলপলিশ পরে থাকে। অতিরিক্ত নেলপলিশ ব্যবহার করার ফলে হাতের নখের অবস্থা খুব বাজে হয়ে যায়।
এতে করে সপ্তাহে ১দিন অলিভ অয়েল দিয়ে ১৫মিনিট ধরে ভিজিয়ে ফলাফল পাবেন সাথে সাথে।
৪। কান ফেটে যাওয়া, কানে গন্ধ হয়ে যাওয়া, কানের ভিতরে চুলকানি কিংবা কান থেকে পানি পড়া এগুলা হলো কানের সমস্যা।
যাদের কানে এই সকল সাধারণ সমস্যা রয়েছে তারা কটন বারের মধ্যে অলিভ অয়েল লাগিয়ে আস্তে আস্তে কানের ভিতরে নাড়াচাড়া করুন। অনেক আরাম পাওয়া যাবে।
৫। শীতকাল আসলে আমাদের হাত পা ফেটে যাওয়া, ত্বকে রুক্ষতা ভাব দেখা দেওয়া ইত্যাদি সমস্যা গুলো বেশি হয়ে থাকে। অলিভ অয়েল এই ক্ষেত্রে ময়শ্চারাইজার এর দারুণ কাজ করে।
যাদের বিশেষ করে পা ফাটে তারা অলিভ অয়েল দিয়ে পায়ের গোড়ালিতে ম্যাসাজ করুন আর রাতে মোজা পরে ঘুমান। সকালেই ফিরে পাবেন তুলতুলে পা। আর গোসলের পর হাতে শরীরে ত্বকে সামান্য পরিমাণ অলিভ অয়েল নিয়ে ম্যাসাজ করুন। ত্বক থাকবে মসৃণ ও টানটান।
৬। আমরা সাধারণত জানি চিটচিটে তৈলাক্ত ত্বকেই ব্রণের আধিক্য বেশি। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি অলিভ অয়েল এর একটি পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে নিন।
৪চামচ লবণের সাথে ৩চামচ অলিভ অয়েল দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। আর ১সপ্তাহ নিয়মিত ২মিনিট করে এইভাবে পেস্ট তৈরি মুখে ম্যাসাজ করুন। ফলাফল নিজেই দেখবেন।
এছাড়া ঠোঁঠের যে মরা চামড়া আছে তাতে অলিভ অয়েলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ঠোঁঠে ঘষুন। ঠোঁটে স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করবে দূর করবে মরা চামড়া।
৭। শিশুদের জন্যে দারুণ কাজ করে অলিভ অয়েল। শিশুদের ত্বকের সাথে খুব সহযে মিশে যায় এই তেল। সাধারণত নবজাতক অনেক শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের সকালে অলিভ অয়েল দিয়ে হাত পা শরীরে ম্যাসাজ করা হয়।
এতে ত্বকের র্যাস, চুলকানি, রুক্ষতা সকল ভাব দূর করে ত্বকে নিয়ে আসবে মসৃণতা।
৮। ত্বকের রুক্ষতা, দাগ চাপ চোখের নিচের কালসিটে ভাব ডার্ক সার্কালস ইত্যাদি সব কিছুতে এই অলিভ অয়েলের ভূমিকা অপরিসীম।
এছাড়া অলিভ অয়েল এখন বিভিন্ন প্রসাদনীতে ব্যবহার করা হয়। সাবানে ও ব্যবহার করা হয়।
সুতরাং বলতে পারি নিত্য প্রয়োজনে অলিভ অয়েল আমাদের বিশেষভাবে কাজ করে। এছাড়া কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে আমরা খেতেও পারি। তবে যাদের ক্ষেত্রে খাওয়া যাবে তারা পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।