বাংলাদেশ ৬ঋতুর দেশে প্রথম ঋতুটি হলো গ্রীষ্মকাল। সাধারণত বাংলা বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ এই দুইমাস নিয়ে হলো গ্রীষ্মকাল। আয়ার ইংরেজীতে এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের শেষ দিকে পর্যন্ত খুব গরম পড়ে। এই গরমকালে পানি শুকিয়ে। যায়। মাঠ ঘাট ফাঁপা হয়ে যায়। অর্থাৎ প্রকৃতি গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা আমরা পেয়ে যায় পরিবেশ থেকে। এই সময় আবহাওহা ও জলবায়ুর তারতম্য ঘটে। আবহাওয়ার তাপমাত্রা বেড়ে যায়। পরিবেশ উষ্ণ করে তোলে। তীব্র এই গরমের রোদের আমাদের ত্বক পুড়ে যায়, কালো হয়ে যায়, তকের তৈলাক্ততা বেড়ে যায়, ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়। গরমে ঘেমে শরীর ম্লান হয়ে যায়। ত্বক শুকিয়ে যায় কিন্তু ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা যায় না। বিভিন্ন কালো দাগ ছোপ বেড়ে যায়।
তাই আসুন জেনে নিই গরমকালের ত্বকের আদ্রতা ভাব ধরে রাখতে কি কি করণীয়। আর গরমকালে ত্বকের যত্নের কিছু সহজ উপায়
১।প্রথমত ভালোভাবে মুখ ধুতে হবে। মুখ ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে। কিন্তু মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্যে আমরা ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারি। ফেসওয়াস দিলে মুখ ধুলে মুখে থাকা তেল ময়লা বের হয়ে যাবে। ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার হবে। মুখের ত্বক পরিষ্কার হলে লোমকূপ গুলো খোলা ও পরিষ্কার থাকবে। তাই এমন ফেসওয়াশ নির্বাচন করতে হবে যেটি বিভিন্ন কাজ করবে। যেমন মুখে মেকাপ করলে সেগুলা তুলতে, রোদের অতিরিক্ত কালসিটে ভাব তুলতে এছাড়া তেলতেলা ভাব দূরে রাখতে পারে এমন ফেসওয়াস ব্যবহার করতে হবে।
২।গরমকালেও অনেকের ঠোঁট ফাটে। এর কারণ হলো ঠোঁটে থাকা পানি প্রখর রোদ শুষে নিয়ে ঠোঁটকে ম্লান করে রাখে। ঠোঁটের সৌন্দর্যরূপ বিলীন হয়ে যায়। তাই এই সময় ও লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে। যাতে ঠোঁটের আদ্র ভাব বজায় থাকে। আর এরকম লিপ বাম ব্যবহার করতে হবে যেগুলো সান প্রটেক্টর। অর্থাৎ রোদের তাপের বিরুদ্ধে কাজ করে। এক্ষেত্রে আপনি কাঠ বাদামের তেল, সিয়া বাটার তেল এছাড়া অন্যান্য উপাদান এর সংমিশ্রণে তৈরি লিপ বাম ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো ধারুণ কাজ করবে।
৩।বাইরে বের হয়ে রোদ থেকে বাঁচতে হলে প্রথমে ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিম। চেষ্টা করুন ত্বকের সাথে খাপ খায় সেরকম সানস্ক্রিম ব্যবহার করার। এছাড়া ভিটামিন সি কিংবা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস সমৃদ্ধ সানস্ক্রিম ব্যবহার করতে হবে। এতে ত্বকের উপাদানের মান ও ক্ষুন্ন থাকে। তবে শুধু সানস্ক্রিম না ত্বকের ক্রিম, লোশন, টোনার, সেরাম এগুলাও ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস সমৃদ্ধ নিতে হবে। এগুলা ত্বকের ক্ষয়রোধ করে। ত্বক স্বাভাবিক ও মসৃণ রাখে। আমরা মুখ ধুয়ে ফেলার পরেও এই প্রসাধনী গুলো ত্বকের সৌন্দর্য ঝৌলুস ধরে রাখে।
৪।গরমকালে ত্বকের যত্নের জন্যে এসেনশিয়াল অয়েল ও ক্যারি অয়েল ব্যবহার কমিয়ে ফেলতে হবে। এই তেল গুলো গরমকালে ত্বকে বিশেষ ক্ষতি করে। ক্যারিয়ার অয়েল ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে এবং অন্যদিকে এসেনশিয়াল অয়েল ত্বকের অম্ল ক্ষারের সাথে প্রতিক্রিয়া করে ত্বকের পি এইচ এর মান এ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তাই আমাদের এই তেল গুল্য মুখের ত্বকে সরাসরি ব্যবহার না করে আমরা এই তেলগুলোর গুণাগুণ সমৃদ্ধ জেল বা ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারি। এতে ত্বকের ক্ষতি হলোনা আর ত্বক পেয়ে গেলো তার মানানসই ময়শ্চারাইজার। যা ত্বকের সৌন্দর্য ভাবকে ধরএ রাখবে।
৫।যারা পার্লারে কিংবা ঘরে বসে ত্বকের যত্ন নেন অনকেই জেনে থাকেন ক্লে মাস্কের কথা। এমনকি তারা গরমকালে ত্বকের যত্নে এই ক্লে মাস্ক ব্যবহার করে থাকেন। এই ক্লে মাস্কে কে অনেকে বলে থাকেন চকলেট ফেসিয়াল। এই ক্লে মাস্ক ব্যবহারের ফলে ত্বকের হারানো আদ্রতা দ্রুত ফিরে আসে।বাসায় এই প্যাক বানাতে পারবেন। এই প্যাকে খনিজসমৃদ্ধ ক্লে পাউডার, নারকেল তেল, এলোভেরা জেল, এসেনশিয়াল অয়েল, পিচ ফলের তেল, ফ্রুট মিকচার একসাথে মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে ফেলুন। এই প্যাক শরীরেও ব্যবহার করতে পারেন। তাই যেখানে ব্যবহার করবেন সেখানের পরিমাণমতো নিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগিয়ে রাখুন ত্বকে। তারপরে তুলে ফেলুন।
যারা ঘরে বসে ত্বকের যত্ন নিতে চান অর্থাৎ অতিরিক্ত কোনো প্রসাধনী সামগ্রী ছাড়া তারা উপরের পদ্ধতিগুলো মেনে চলতে পারেন।